মুশতাক আহমেদ

লেখক মুশতাক আহমেদের ময়নাতদন্ত শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুর ঘটনায় কারাগারের পক্ষ থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।

গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শাফী মোহাইমেন বলেন, ‘মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়। গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন তৈরির পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ বায়েজীদ বলেন, ‘সাড়ে ১০টার দিকে লেখক মুশতাক আহমেদের সুরতহাল করা হয়েছে। তার পিঠে যেকোনো সময় ‘ঘা’ হয়েছে এমন দাগ পাওয়া গেছে। ডান হাতে লালচে কালো ছোট দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালে আনা বা গাড়িতে উঠানোর সময় এ দাগ হয়ে থাকতে পারে।’

হাসপাতাল মর্গে মরদেহের জন্য অপেক্ষমাণ লেখক মুশতাক আহমেদের বড় ভাই ডা. নাফিছুর রহমান বলেন, ‌‘তার মরদেহ আমি নিজে দেখেছি। কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন ছাড়া আমি এ ব্যাপারে কী বলব? আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমরা কোনো মামলাও করব না।’

কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে র‌্যাবের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।

কারা সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে মুশতাককে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গত বছরের মে মাস থেকে কারাবন্দি ছিলেন মুশতাক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।

দেশে কুমির চাষের অন্যতম উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদ বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। থাকতেন ঢাকার লালমাটিয়ায়। তার সঙ্গে স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মাও থাকতেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারবিরোধী পোস্ট দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে ২০২০ সালের ৫ মে রাজধানীর কাকরাইল ও লালমাটিয়া থেকে আটক করে র‌্যাব। পরে রমনা থানায় মুশতাকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে র‌্যাব তিনটি মামলা করে।

গত ১১ জানুয়ারি ডিজিটাল‌ নিরাপত্তা আইনের মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার কর্মী দিদারুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

এমএসআর