গাজীপুরে ধীরাশ্রম স্টেশন এলাকায় দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের চার বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।  

রোববার (১৪ জুলাই) রাত সোয়া নয়টার দিকে গাজীপুরের ধীরাশ্রম রেল স্টেশনের আউটার সিগন্যালের পাশে এ লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে।  

জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. রেজাউল ইসলাম জানান, পঞ্চগড় অভিমুখে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি বগি ধীরাশ্রম স্টেশনের উত্তর পাশে লাইনচ্যুত হয়। এর মধ্যে একটি বগি পুরোই কাত হয়ে পড়েছে, বাকিগুলো আংশিক কাত হয়ে পড়েছে।

ট্রেনের যাত্রী রাসেল জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে গাজীপুরের ধীরাশ্রম স্টেশন পার হওয়ার আগেই ট্রেনটির মাঝখান থেকে চারটি বগি (ঘ, ঙ, চ ও ছ) লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ‘চ’ বগিটি বেশি কাত হয়ে পড়ে। বাকিগুলো আংশিক কাত হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানায়, বিকট শব্দে ট্রেনের বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়। এরপর তারা দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ট্রেনের ভেতরে থাকা যাত্রী বিশেষ করে নারীরা চিৎকার করতে থাকেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রেল পুলিশ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্পেশাল রেসপন্স টিমের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং উদ্ধার কাজ শুরু করেন।  আহতদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত শান্তু নূর (২০), মেহেদী হাসান (২২), ইজাজ নাকিব নূর (১৭), আহসান হাবিব (২০), ফাহিম (১৯), সামি (২০), জাকিয়া সুলতানা (২৩), রোকেয়া (১৯), মল্লিকা ঘোষকে (২৫) হাসপাতালে আনা হয়েছে।  তাদের মধ্যে জাকিয়া, রোকেয়া, ফাহিমকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা সবাই ট্রেনের যাত্রী।

স্টেশন মাস্টার মো. রেজাউল ইসলাম জানান, ট্রেনটি উদ্ধারের জন্য ঢাকায় খবর দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকারী ট্রেন এলে লাইনচ্যুত বগিগুলোর উদ্ধার কাজ শুরু হবে। পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে এসে আটকা পড়েছে। এ ট্রেনের যাত্রীরা বাসে এবং বিকল্প নানা উপায়ে ঢাকার দিকে চলে যাচ্ছেন।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আ. হামিদ মিয়া জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার  সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। স্টেশনে কর্তব্যরত পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ট্রেন দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মতো গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর চাইতে গুরুতর হতাহতের কোনো খবর পাইনি।

শিহাব খান/আরএইচ