নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অটোরিকশা চালক বলরাম মজুমদারকে (১৫) ভাড়ার ১০ টাকা নিয়ে বিতর্কের জের ধরে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান আসামি শ্যামল চন্দ্র দাস (৩২)। 

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২নং আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদ আসামি শ্যামল চন্দ্র দাসের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালতের নির্দেশে আসামিকে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আসামি শ্যামল চন্দ্র দাস পার্শ্ববর্তী সেনবাগ উপজেলার ৯নং নবীপুর ইউনিয়নের নারায়ন চন্দ্র দাসের ছেলে। এর আগে বুধবার (১০ আগস্ট) রাতে আসামি শ্যামল চন্দ্র দাস ও আবদুল খালেক ওরফে তোতা মিয়াকে (৫২) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে চোরাইকৃত অটোরিকশার অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে।  

গ্রেপ্তারকৃত আবদুল খালেক ওরফে তোতা মিয়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের মাহবুবুল হক মুন্সি বাড়ির মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে। 

ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আসামিরা চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি রিকশাচালক বলরাম মজুমদারকে (১৫) বসুরহাট কলেজ রোড থেকে যাত্রী হিসেবে তার অটোরিকশায় উঠে উপজেলার ৪নং চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের মহিষের ডগি এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছে ইউনুছ চৌকিদারের বাড়ির পূর্ব পাশে কৃষি জমিতে নিয়ে বলরামকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আসামিরা।

নিহত বলরাম (১৫) উপজেলার চর হাজারী ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের সনাতন মহাজন বাড়ির লনি গোপালের ছেলে। সে পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার বাড়ি সংলগ্ন মহিষের ডগি থেকে রিকশাচালক বলরামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। 
 
তিনি বলেন, বলরাম মজুমদারের সঙ্গে ঘটনার ৪-৫ দিন পূর্বে অটোরিকশার ১০ টাকা ভাড়া নিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক ২ জন আসামির ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়াকে কেন্দ্র করে আসামিরা তাকে শ্বার্সরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে আসামি আব্দুল খালেক ওরফে তোতা মিয়ার কাছে ২৭ হাজার-টাকায় অটোরিকশা বিক্রয় করা হয়। রিকশা বিক্রয়ের ৫ হাজার টাকা অপর আসামি শ্যামল চন্দ্র দাসকে ভাগ দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামি শ্যামল চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হাসিব আল আমিন/এমএএস