মেহেরপুরে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুরের চাষ ও উৎপাদন বেশ সফলতা পেয়েছে। সমন্বিত মুজিবনগর কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে সম্ভাবনাময়ী খেজুর বিপণন ও সংরক্ষণের বিষয়টি এখনো গবেষণাধীন। জেলার আবহাওয়া ও মাটি খেজুর চাষে উপযোগী হওয়ায় উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয়ে উঠবেন বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের প্রাচীরের কোল ঘেঁষে শোভা পাচ্ছে খেজুরগাছ। সারি সারি খেজুরগাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে হলুদ ও লাল বর্ণের খেজুর। কোনোটা হলুদ, সবুজ আবার কোনোটা খয়েরি রঙের।

খেতে সুস্বাদু আর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই খেজুর মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে এর চাষ হলেও পরীক্ষামূলক বাংলাদেশে এটির চাষ শুরু হয়েছে বছর দশেক আগে। এরই ধারাবাহিকতায় মেহেরপুরের মুজিবনগরে এ খেজুর চাষের ওপর গবেষণা শুরু করে বাংলাদেশ কৃষি করপোরেশন।

রোপণ করা হয় ১২টি জাতের ২ হাজার ৩২৪টি গাছ। ২৯টি খেজুরগাছ থেকে এ বছর ১২ মণ খেজুর আহরণ করা হয়। এর মধ্যে আজুয়া, আম্বর, লুলু ও মরিয়ম খেজুর রয়েছে।

খেজুর-বাগান পরিচর্যাকারী ইমরান হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ খেজুর-বাগান দেখতে আসে। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন খেজুর-বাগান করবেন। গবেষণা শেষে মেহেরপুর জেলার অনেকেই খেজুর আবাদ করবেন, এমন পরামর্শ নেন অনেকেই।

মুজিবনগরের বাসিন্দা শাকিল রেজা জানান, বিপণন ও সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হলে আমি খেজুর-বাগান করব।

বাগোয়ান গ্রামের মাসুদ রানা জানান, তিনিও দেখতে এসেছেন খেজুর-বাগান। পরিচর্যাকারীর সঙ্গে পরামর্শ নিয়েছেন। তিনি কৃষি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাগান করবেন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ২০১৪ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা রোপণ করা হয়। বাংলাদেশ রাইস রিসার্স ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ গাছগুলো বেড়ে ওঠে। ২০১৯ সালে কয়েকটি গাছে খেজুর আসে। শুরু হয় সংরক্ষণ ও বিপণনের ওপর গবেষণা, যা এখন চলমান।

রাইস রিসার্স ইনস্টিটিউট কুষ্টিয়া অঞ্চলের সিনিয়র সায়েন্টিফিক মাহাবুবুর রহমান দেওয়ান জানান, সংরক্ষণ ও বিপণনের বিষয়টি গবেষণায় সফলতা পেলে এ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে খেজুর চাষ হবে। সেই সঙ্গে আর্থসামাজিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে মধ্যপ্রাচ্যের এই খেজুর।

এনএ