উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করায় রাজশাহী নগরীতে মুকুল আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত করে তার প্রতিবেশী। পরে সোমবার (১ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত মুকুল আলী নগরীর শাহমখদুম থানার হরিষার ডাইং এলাকার আনসার আলীর ছেলে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (২ আগস্ট) থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে মো. শামিম।

ওই মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৮ জনকে। এ ছাড়া আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এরই মধ্যে মামলায় এজাহারনামীয় ৫ আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরা হলেন হরিষার ডাইং এলাকার বকুল আলীর মেয়ে খাদিজা (১৯), একই এলাকার আসাদ আলীর ছেলে মো. মিঠন (৩০), বাদশা মিয়ার ছেলে মো. মোমিন (২৫), জান মোহাম্মাদের ছেলে মো. সোহেল (৩২) ও কর্ণহার থানার মোল্লা ডাইং এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে মো. পলাশ (৪০)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগরীর শাহমখদুম থানার উপপরিদর্শক শরিফুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজাচ্ছিলেন হরিষার ডাইং এলাকার বকুলের ছেলে নাহিদ। এতে চরম অসুবিধা হয় প্রতিবেশী মুকুল আলীর অসুস্থ ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের।

বাধ্য হয়ে নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করেন মুকুল আলী। নাহিদ তাৎক্ষণিক সাউন্ড বক্সের শব্দ কমিয়ে দিলেও মুকুল সেখান থেকে চলে আসার পর আবারও শব্দ বাড়িয়ে দেন।

মুকুল আলী ফের নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করেন। এনিয়ে নাহিদ, তার বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় মুকুলের। পর্যায়ে লোহার রড দিয়ে মুকুলের মাথায় আঘাত করে নাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর জখম করে।

মুকুলের চিৎকার শুনে তাকে রক্ষায় এগিয়ে যান ছেলে শাহীন আলম ও জামাই আলমগীর। মারপিট ও ছুরিকাঘাতে তারাও জখম হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান মুকুল। পরে এ নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের স্বজনরা।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম জানান, ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন আসামিরা। মামলা দায়েরের পর তাদের গ্রেপ্তার অভিযানে নামে পুলিশ। 

সোমবার ( ২ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে পুলিশ আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান এই নগর পুলিশ কর্তা।

আরআই