প্রসূতির গর্ভের ফুল পেটে রেখে সেলাই, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
পিরোজপুর শহরে এক প্রসূতি নারীর সিজারের সময় পেটের অংশ বেশি কেটে ও গর্ভের ফুলের অংশ রেখে অপরিষ্কার রেখেই পেট সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ইকবাল মাসুম এ মামলার বিষয়ে পিরোজপুর সিআইডিকে তদন্ত করে দেখতে আদেশ দেন। এ ছাড়া জেলা সিভিল সার্জনকে বোর্ড বসিয়ে ভুক্তভোগীর মতামত নিতে আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী মনিরা বেগম (২২) পিরোজপুর সদর উপজেলার আলামকাঠী এলাকার জসিম খানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের চিকিৎসক ডা. শিকদার মাহমুদ ও এক হাসপাতালের ম্যানেজার সঞ্জয় মিস্ত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী এ এস ওমান জানান, পিরোজপুর শহরের আলামকাঠী এলাকার জসিম খান তার প্রসূতি স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ডা. শিকদার মাহমুদের কাছে গেলে তিনি তাদের আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। গত ৮ জুলাই ওই নার্সিং হোমে শিকদার মাহমুদের তত্ত্বাবধানে প্রসূতিকে ভর্তি করা হলে ক্লিনিকের ম্যানেজারের চাপে দুপুরেই মনিরা বেগমের সিজারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরে দুপুরে ডা. শিকদার মাহমুদ তড়িঘড়ি করে ক্লিনিকে এসে সিজার করেন। সিজারের সময় মনিরা বেগমের পেট প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কেটে ফেলেন এবং নবজাতক শিশুর নাভির অংশ কেটে তা না বেঁধে রাখা হয়। এ ছাড়া প্রসূতির গর্ভের ফুলের অংশ পেটের ভেতরে রেখে পেট সেলাই করে তিনি চলে যান।
তিনি আরও জানান, এরপর মনিরা বেগমকে বাড়ি নিয়ে গেলে কয়েক দিন পরেই মনিরার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তখন আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে গিয়ে ডা. শিকদার মাহমুদকে বিষয়টি জানালে তিনি রোগীকে কোনো চিকিৎসা না দিয়েই পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। রোগীকে সেখানে ভর্তি করা হলে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রোগীর মোট ১৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়।
খুলনা হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান যে গর্ভের ফুলের অংশ পেটের ভেতরে রেখে অপরিষ্কারভাবেই পেট সেলাই করা হয়েছে।
এরপর ডা. শিকদার মাহমুদ ও ক্লিনিকের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী প্রসূতি নারী মনিরা বেগমের স্বামী জসিম খান আদালতে মামলাটি করেন।
মো. আবীর হাসান/এনএ