ছেলের চাকরির জন্য রাজশাহী থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এসে নাজমা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূ প্রতারক চক্রের হাতে অপহরণের শিকার হন। এর তিন ঘণ্টা পর পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।

অপহৃত মাকে ফিরে পেয়ে তার ছেলে শাহিনুর রহমান ও মেয়ে নাজমুন নাহার সুমি পুলিশের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

রোববার (৩১ জুলাই) বিকেলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, নাজমা রাজশাহী জেলার চন্দ্রিমা থানার শিরোইল কলোনির নুর মোহম্মদ সরদারের স্ত্রী। তার বড় ছেলে শাহিনুর অনেক দিন ধরে বেকার। বিভিন্ন স্থানে তিনি চাকরির সন্ধান করছিলেন। একদিন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থেকে তাকে একটি লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে শনিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বাসযোগে ছেলে শাহিনুর ও মেয়ে সুমিকে নিয়ে নাজমা রায়পুরে আসেন। চাকরিদাতা প্রতারক চক্রের দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছালে শাহিনুরকে মারধর করা হয়।

একপর্যায়ে নাজমাকে তারা অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে শাহিনুরকে ফোন করে নাজমাকে জীবিত পেতে হলে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা বিকাশে পাঠানোর জন্য বলা হয়। নিরুপায় হয়ে শাহিনুর ও সুমি মাকে বাঁচাতে বিকাশ (নাজমার বিকাশ) নম্বরে ৪০ হাজার টাকা পাঠায়। প্রতারকদের বিকাশের পিন নম্বরও বলে দেওয়া হয়। কিন্তু বাকি টাকার জন্য তাদের চাপ দেয়।

একপর্যায়ে শনিবার রাত ৯টার দিকে শাহিনুর ও তার বোন সুমি রায়পুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযানে নামে। অপহৃত এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নাজমাকে উপজেলার পশ্চিম মাছিমপুর এলাকায় রাস্তার ওপর ফেলে রেখে প্রতারকরা পালিয়ে যায়। পরে নাজমা আজিজ উল্যা পাটোয়ারি বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ঘরে আশ্রয় নেন। পুলিশ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

শাহিনুর রহমান ও নাজমুন নাহার সুমি জানান, তাদের মাকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে অপহরণকারীরা এক লাখ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু টাকা না থাকায় পুরো টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। পুলিশকে জানালে পুলিশ মাকে উদ্ধার করে দেয়।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, অভিযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে নেমে নাজমা আক্তারকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় প্রতারকরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। বিকাশ নম্বর ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। প্রতারকরা চাইলেও টাকা নিতে পারবে না। নাজমাসহ তার সন্তানদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ