গুলি করে নেতাকর্মী হত্যার জবাব সরকারকে দিতে হবে
ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর বলেছেন, গুলি করে নেতা-কর্মী হত্যার জবাব সরকারকে দিতে হবে। ভোলার মতো একটি শান্তিপূর্ণ দ্বীপে গুলি করে মানুষ হত্যা, এটি কিসের ইঙ্গিত? সরকার কি চায়?
রোববার (৩১ জুলাই) দুপুরে তার বাসভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এই কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
আলমগীর বলেন, আমরা বিরোধী দল করি। সব অনিয়ম-অবিচারের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করবই। ভোলায় এর আগেও বিক্ষোভ করেছি, এটি নতুন কিছু নয়। বিগত দিনে এমন কোনো ঘটনা তো ঘটেনি? হঠাৎ করে কী এমন ঘটল? কী এমন ব্যত্যয় হলো? কী এমন অন্যায় করেছি আমরা?
প্রশ্ন তুলে আলমগীর বলেন, এটি কিসের রাজনীতি? এমন ঘটনায় ভোলাবাসী অভ্যস্ত নয়। ভোলার চরিত্রের সঙ্গে এই ঘটনা যায় না।
বিনা কারণে পুলিশের গুলি বর্ষণের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, রাস্তায় নামার আগেই আপনারা (পুলিশ) গুলি ছুড়লেন। ঘরের সামনে, আমার অফিসের সামনে। এহেন ঘটনায় আমরা অবাক হয়ে গেছি। কী একটি দেশ? আমরা পূর্ব ঘোষণা অনুসারে এখানে কর্মসূচি পালন করছিলাম। পুলিশ সকালে এসে জেনে গেছে, আমরা কী করব। আমি তাদেরকে বলেছি, দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ। অথচ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ নিয়ে সদর রোডে নামার প্রাক্কালে অর্তকিতে পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি বর্ষণ করেন। লাঠিচার্জ করে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই এ ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি চায় না। পুলিশ নিজেরাই পরিস্থিতি ঘোলা করছে। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি চান।
আরও পড়ুন : ভোলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত অর্ধশতাধিক
গোলাম নবী আলমগীর জানান, পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবদুর রহিমের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমসহ ৬ জনের অবস্থা গুরুত্বর। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আরও আহত হয়েছেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোপান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিনসহ শতাধিক নেতা-কর্মী। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ আছেন।
তবে ভোলা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ সরদার দাবি করেছেন, সমাবেশ শান্তিপূর্ণই ছিল। তবে সমাবেশ শেষে মিছিল করতে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল নিক্ষেপ শেষে গুলি চালায়। এতে ১০ জন পুলিশ এবং বিএনপির কিছু নেতাকর্মী আহত হয়। একজন মারাও যায়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভোলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিএনপি সভাপতির বাড়িসহ মহাজনপট্টি ও কালিনাথ বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ভোলা সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক নাফিজা তাসলিম ঐশি বলেন, আমাদের এখানে যেসব রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাদের অধিকাংশ রোগীই গুলিবিদ্ধ। এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। আরও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে বরিশালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরআই