সাংবাদিকের সঙ্গে কথা নয়, ছাত্রলীগকে মেয়র সাদিক
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
সোমবার (২৫ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে নবনির্বাচিত নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার সময় নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ওই সময় সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, তিন মাসের মধ্যে এরা সম্মেলন করবে। এই কমিটি নিয়ে অনেকের অনেক প্রশ্ন আছে আমি জানি। অনেক সাংবাদিক ফোন দিয়েছিল, আমি কারো সাথে কথা বলিনি এবং ওদেরও (সদ্য ঘোষিত কমিটি) বলে দিয়েছি কোনো সাংবাদিকের সাথে কথা বলার দরকার নেই।
দশ বছর পর ঘোষিত বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিকে ‘সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি’ বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের এই নেতারা এত বছর আমার সাথে রাজনীতি করছে। আমি সবসময় হাইলাইট করি তাদের।’
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রকে ইঙ্গিত করে সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সংগঠন, ধর্ম, সংবিধান মানুষের জন্য, মানুষ কিন্তু এগুলোর জন্য নয়।’
১২ বছর আগে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগে একজন সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদক করে কমিটির অনুমোদন দিল কেন্দ্র। কিছুদিন পর জেলা ছাত্রলীগ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারলেও মহানগর কমিটি পোস্ট ভাগাভাগি নিয়ে আর পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। যেহেতু ১২ বছর কমিটি নেই। এই ছেলেগুলির বয়স হয়ে গেছে। তারা বারো বছর আমার পেছনে হেঁটেছে। আমি আজকে যেখানে এসেছি এতে তাদের শ্রম শতভাগ।
তারা তো (সদ্য ঘোষিত) কমিটিতে ছাত্রলীগ করার জন্য আসেনি। অ্যাটলিস্ট, যাওয়ার আগে তাদের স্বীকৃতিটা আমি দিতে পারলাম।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ যুক্ত করেন, এত দিন তারা (ছাত্রলীগ) পোস্ট ছাড়া বরিশাল শহরকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমার মনে হয় তারা শহরকে হানাহানি-কাটাকাটিমুক্ত করেছে। আগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কাজ ছিল, সকাল হলেই প্রকৌশলীদের দপ্তরে বসে থাকা। অথচ এখন টেন্ডারবাজি নেই, চাঁদাবাজি নেই।
সদ্য ঘোষিত কমিটির অনেকের ছাত্রলীগ সংগঠনে যুক্ত থাকার বয়স পার হয়ে গেছে স্বীকার করে তিনি বলেন, এত দিন পরে কমিটি হয়েছে, এতে তাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস-আনন্দ বিরাজ করছে; কেউ কান্না করছে। কেউ বিশ্বাসই করতে পারছে না! কারণ তারা এত দিন ছাত্রলীগের নামধারী ছিল। তাদের অনেকের বয়স পার হয়ে গেছে।
সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, আমি নিজে মেয়র বা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যতটুকু না সন্তুষ্ট, আজ কমিটিতে ওদের স্থান করে দিতে পারায় তার চেয়ে বেশি সন্তুষ্ট। তারা কমিটি চায়নি, কোনোদিন কোনো কিছু চায়নি। তাদের স্বীকৃতি দিতে পেরে আমি নিজেকে মনে করি পরিপূর্ণ।
এরপর দুপুরে ছাত্রলীগের নেতারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিকে দুপুরে ছাত্রলীগের একাংশ ঘোষিত কমিটিকে প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ করেছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ৩২ সদস্যের কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ