মাগুরায় পুলিশের মারধরে আব্দুস সালাম (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত আব্দুস সালাম মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৮নং নাকোল ইউনিয়নের রায় নগর গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন। এছাড়া ওয়াপদা বাসস্ট্যান্ডে বাসের টিকিট কাউন্টারে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার নাকোল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জামাল অতর্কিত এসে ওয়াপদা মোড়ে কৃষক আব্দুস সালামের বুকে লাথি মারে। এ সময় তিনি পড়ে গিয়ে আহত হন। ওই অবস্থায় তাকে মারধর করতে করতে নাকোল পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে যায় এসআই জামাল। সেখানেও তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

এক পর্যায়ে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে পুলিশের গাড়িতে করে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই সময় নাকোল ওয়াপদা এলাকা থেকে এলাকাবাসী পুলিশের গাড়ি আটকে আব্দুস সালামকে দেখতে চান। তখন দেখা যায় তিনি আর বেঁচে নেই।

প্রত্যক্ষদর্শী আলীয়ার রহমান বলেন, অনেক লোকের সামনেই দারোগা জামাল আব্দুস সালামের বুকে লাথি মেরে ফেলে দেন। তাকে ওই অবস্থায় জোর করে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে বেদম মারপিট করা হয়। মূলত, পুলিশ ফাঁড়িতেই মারা যান আব্দুস সালাম। চিকিৎসার কথা বলে তাকে পুলিশের গাড়িতে মাগুরা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমরা ওই সময় গাড়ি আটকে দেখি তিনি আগেই মারা গেছেন। 

এ বিষয়ে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও নাকোল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জামালের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মাগুরার শ্রীপুর থানা পুলিশে ওসি প্রিটন সরকার বলেন, আমি এখন ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। কিছুদিন আগে আব্দুস সালাম একটি ছেলেকে মারধর করেছিল। মূলত তাকে ধরতেই যাচ্ছিল নাকোল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. জামাল। তার বুকে লাথি মারা হয়নি বলে জামাল আমার কাছে দাবি করেছেন। 

ওসি প্রিটন সরকার আরও বলেন, মূলত দৌড় দিতে গিয়ে আব্দুস সালামের মৃত্যু হয়েছে বলে জামাল দাবি করেছেন।

মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার এ্হসান হাসান বলেন, যখন হাসপাতালে আনা হয় তার আগেই আব্দুস সালাম মারা গেছেন। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।

এ ঘটনায় বিকেল ৬টার দিকে এলাকাবাসী ওয়াপদা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় তারা নির্যাতনকারী নাকোল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জামালের বিচার দাবি করেছেন।

একেএম/এমএএস