ব্যবসায়ীর ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই, পুলিশ কর্মকর্তা কারাগারে
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অস্ত্রের মুখে এক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) বিকেলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো. বাবুল হোসেন (৩৫)। তিনি ভাঙ্গা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। অপরজন ওই পুলিশ কর্মকর্তার সহযোগী। তার নাম মেহেদী হাসান মুন্সী ওরফে মৃদুল (২৫)। তিনি ভাঙ্গা পৌরসভার হোগলাডাঙ্গি সদরদী মহল্লার বাসিন্দা।
বিজ্ঞাপন
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী পাপ্পু বিশ্বাস গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ কর্মকর্তাসহ ওই দুই ব্যক্তির নামে অস্ত্রের মুখে ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) ভাঙ্গা থানায় মামলা করেন। ওই মামলা দায়েরের পরেই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এএসআই বাবুল হোসেনের ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার বাসা থেকে ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া থানার কামঠানা গ্রামের অজিৎ বিশ্বাসের ছেলে পাপ্পু বিশ্বাসের যশোর জেলা শহরে স্বর্ণের দোকান রয়েছে। গত ৭ জুলাই রাতে ভাঙ্গা বাজারের সোনার তরী জুয়েলার্সের মালিক পলাশ বণিকসহ কয়েক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ১১০ ভরি স্বর্ণ কেনেন পাপ্পু বিশ্বাস। স্বর্ণ কিনে নিয়ে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গা বাজারেই তার গতিরোধ করেন এএসআই মো. বাবুল হোসেন ও তার সহযোগী মেহেদী হাসান। এ সময় পুলিশ সদস্য পাপ্পুর কাছে থাকা স্বর্ণ অবৈধ বলে ছিনিয়ে নেন। পাপ্পু তার ব্যবসায়ীক কাগজপত্র দেখালেও ৪০ ভরি স্বর্ণ রেখে বাকি স্বর্ণ ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দেন এএসআই বাবুল। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ব্যবসায়ী পাপ্পুকে হুমকি দেন।
ঘটনার ছয় দিন পর পাপ্পু বিশ্বাস ভাঙ্গা থানায় বুধবার (১৩ জুলাই) মামলা করেন। মামলায় এএসআই বাবুল ও তার সহযোগীকে আসামি করা হয়।
ভাঙ্গা বাজারের সোনার তরী জুয়েলার্সের মালিক পলাশ বণিক জানান, গত ৭ জুলাই রাতে পাপ্পু বিশ্বাস তিনিসহ ভাঙ্গা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে স্বর্ণ কেনেন। স্বর্ণ কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইয়ের শিকার হন পাপ্পু।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মুনতাসীর মারুফ বলেন, বুধবার ব্যবসায়ী পাপ্পু বিশ্বাস ভাঙ্গা থানার এএসআই মো. বাবুল হোসেনসহ দুইজনের নামে মামলা করেন। মামলার পর এএসআইসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয় বুধবার বিকেলেই। ফরিদপুর তিন নম্বর আমলি আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অরুপ বসাকের আদেশে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ভাঙ্গা থানার এএসআই মো. বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জহির হোসেন/আরএআর