মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম

সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য হুমকি, তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাওয়ায় গণমাধ্যমকর্মীকে গালাগাল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর প্রচারণার অভিযোগে বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমের বিরুদ্ধে সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মাছরাঙা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ও হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মো. মাসুদ আলী ফরহাদ গত ১৪ জুন এ মামলা দায়ের করেন।

ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবুল কাশেম মামলাটি আমলে নিয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। মামলায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।

মোহাম্মদ আলম হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও নবীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৯ বছর কর্মরত ছিলেন। ২০২০ সালে ৯ আগস্ট তাকে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বদলি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মোহাম্মদ আলম নবীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকার সময় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে ৮৯ জন ভুক্তভোগী মৎস্যজীবী অভিযোগ দাখিল করেন। এ অভিযোগ তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যান। এ সময় মোহাম্মদ আলম গণমাধ্যমকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হবিগঞ্জে সাংবাদিকদের কর্মকাণ্ড নিয়ে মানহানিকর পোস্ট করেন।
 
পরে মৎস্যজীবীদের অভিযোগের বরাত দিয়ে মাছরাঙা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তিনি টেলিভিশনটির প্রতিনিধি মাসুদ আলী ফরহাদকে মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও নানাভাবে হুমকি দেন।

এ বিষয়ে পিবিআই হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তাদির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শুনেছি একটি মামলা দায়ের হয়েছে। কাগজ হাতে এসে পৌঁছালে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আহমদ খান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার পর গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে মৎস্য কর্মকর্তার এমন অসদাচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার খর্বকারী এসব কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি রাসেল চৌধুরী বলেন, মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ায় তাকে বদলি করা হয়েছে। নতুন কর্মস্থলে গিয়েও তিনি অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেছেন। হবিগঞ্জের সাংবাদিকদের তিনি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে গেছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের বিচার হওয়া জরুরি।

এমএএস