একটি পাখার দাম ৬০ টাকা, মোমবাতি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়
গরমে কাজ করতে কষ্ট হয়। বাড়িতে ছোট বাচ্চা আছে। রাতে আধা ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলেও বাকি রাতে আর খবর মেলে না। গরমে বাচ্চাটা কান্না করে, ঘুমাতে পারে না। বউ হাতপাখা কিনতে বলছে। আগে ২০ টাকায় যে হাতপাখা কিনতাম সেটা নিতে হলো ৬০ টাকায়। ৫টা মোমবাতি কিনলাম পঞ্চাশ টাকা দিয়ে। কিছু দিন আগে কিনেছিলাম ত্রিশ টাকা দিয়ে। সারা দিনে ৩৮০ টাকা আয় করেছিলাম। এখন এগুলো কিনতেই অনেকগুলো টাকা চলে গেল। আমাদের দেশটায় এমন। সুযোগ পেলেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। ভোগান্তি আমাদের খেটে খাওয়া মানুষদের বেশি হয়।
ঠাকুরগাঁও রোড বাজারে হাতপাখা ও মোমবাতি কেনার পর এভাবেই নিজের ক্ষোভের কথা বলছিলেন সদর উপজেলার রহিমানপুরের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি তোফায়েল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
তীব্র গরম আর কেনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়া টানা পাঁচ দিন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন। গত কয়েক দিনে লোডশেডিং বেড়েছে কয়েকগুণ। দিন থেকে রাতের লোডশেডিং আরও ভয়াবহ। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জেলা শহরের লাখ লাখ মানুষ।
তীব্র গরম ও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে শোচনীয় অবস্থা হাসপাতালের রোগীদের। একদিকে ভ্যাপসা গরম অন্যদিকে লোডশেডিং হওয়ায় শ্রমজীবি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রভাব পড়েছে।
এমন দুর্বিষহ অবস্থা থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে মানুষ হাতপাখা ও মোমবাতি কিনছেন। তবে নির্দিষ্ট দামের চেয়ে বেশি দাম না দিলে হাতপাখা ও মোমবাতি মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চন্ডিপুরের বাসিন্দা রিফাত হোসেন বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়ছে। বিদুৎ তো থাকে না। একটা হাতপাখা ৭০ টাকা দিয়ে কিনলাম। ২০ টাকার হাতপাখা তিনগুন দাম দিয়ে কিনতে হলো। জানি না কবে আবার সবকিছু স্বাভাবিক হবে।
জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল হক বলেন, রাতে ব্যবহারের জন্য আমাদের বাড়িতে কোনো টর্চলাইট নেই। সেজন্য বাজার থেকে একটা মোমবাতি কিনলাম ১০ টাকা দিয়ে। কিছু দিন আগে সাত টাকা দিয়ে নিয়েছিলাম, আজ দশ টাকা দিয়ে কিনলাম।
ঠাকুরগাঁও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ সাদী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোক্তাদের স্বার্থে আমাদের নিয়মিত বাজার তদারকি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেউ অতিরিক্ত মূল্য নিয়ে সামগ্রী বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কবে দূর হবে এ ভোগান্তি, বন্ধ হবে ঘন ঘন লোডশেডিং এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু আশরাফ মোহাম্মদ সালেহ বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। আমাদের জেলায় চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট। আমরা পাচ্ছি ৩০ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী না পাওয়ার কারণে তিন দিন থেকে এ সমস্যা হচ্ছে। কবে নাগাদ সমস্যা সমাধান হবে তা বলা মুশকিল।
এম এ সামাদ/এসপি