মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হয়েছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার মো. আফ্ফান মিয়া (৯)।

আফ্ফান উপজেলার দক্ষিণ শাহেদল গ্রামের মাহতাব উদ্দিন স্বপনের মেজ ছেলে। সে উপজেলার আল-জামিয়াতুল কাদিরিয়া ও শাহেদল এতিমখানা মাদরাসার ছাত্র। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হোসেনপুর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী শাহেদল গ্রামের মাহতাব উদ্দিন স্বপনের তিন ছেলে। স্বপনের ইচ্ছে একজনকে কোরআনের হাফেজ বানাবেন। সেই ইচ্ছে থেকে বড় ছেলেকে মাদরাসায় ভর্তি করিয়েও হাফেজ বানাতে পারেননি। পরে মেজ ছেলে আফ্ফান মিয়াকে ভর্তি করান আল-জামিয়াতুল কাদিরিয়া ও শাহেদল এতিমখানা মাদরাসায়।

আফফানের বাবা মাহতাব উদ্দিন স্বপনের সঙ্গে কথা হলে তিনি ছেলের কৃতিত্বের কথা বলে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বড় ছেলেকে কোরআনে হাফেজ করতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে হাফেজ বানাতে পারিনি। বড় ছেলে যখন পারেনি, তখন আমার খুব জিদ হলো। মেজ ছেলেকে হাফেজ বানাবই। আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। মহান রাব্বুল আলামিন ও শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞা জানাচ্ছি। আমার ছেলের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

আফ্ফানের শিক্ষক হাফেজ দিদারুল ইসলাম জানায়, ৮ বছর বয়সে নুরানিতে ভর্তি হয়ে নুরানি পড়ার পর মাত্র ৩ মাস নাজেরা পড়ে (কোরআন দেখে পড়া) হেফজ ছবক নেয় আফ্ফান। হেফজ ছবক নেওয়ার পর ৬ মাসে প্রতিদিন ৫-৬ পৃষ্ঠা করে মুখস্থ করে ছবক দিত সে। এভাবে মাত্র ছয় মাসে পুরো কোরআন মুখস্থ করে ফেলে আফ্ফান। এখন  প্রতিদিন সকালে আধা পারা, বিকেলে আধা পারা করে কোরআন মুখস্থ পড়ে শুনাচ্ছে আফ্ফান।

মাদরাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) হাফেজ মাওলানা মুফতি আবুল কাশেম বলেন, এমন নজির খুবই কম। আফ্ফান তার মেধা ও কঠোর পরিশ্রমে তা সম্ভব করেছে। স্বাভাবিকভাবে অন্যদের ৩-৪ বছর বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লেগে যায়, সেখানে আফ্ফান ৯ বছর বয়সে অল্প সময়ে পুরো কোরআন মুখস্থ করেছে। আমাদের মাদরাসার ইতিহাসে ৬ মাসে শুধু আফ্ফান কোরআন মুখস্থ করেছে, আর কেউ পারেনি।

এসকে রাসেল/এসপি