বরিশালের বাবুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন নান্টু সিকদার (২৮) নামে এক যুবক। এ সময় বাবা চানমদ্দিন সিকদার ও বড় ভাই মিন্টু সিকদার বাধা দিতে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন তিনি। বুধবার (১৫ জুন) রাতে উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মাহমুদা বেগম (২২) পার্শবর্তী গৌরনদী থানার শরিকল ইউনিয়নের কুরিরচর গ্রামের  মো. খলিলুর রহমানের মেয়ে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে বাবুগঞ্জ থানায় নিহতের বড় ভাই মো. নূরে আলম বাদী হয়ে মামলা করেন। 

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, পারিবারিক কলহ এবং সন্তান না হওয়া এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যায় অভিযুক্ত নান্টু সিকদারকে রাতেই আটক করা হয়েছে। মামলার পর তাকে আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

জানা গেছে, বুধবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদিয়া এলাকার চানমদ্দিন সিকদারের ছেলে নান্টু সিকদার স্ত্রী মাহমুদাকে দা দিয়ে কোপাতে শুরু করেন। এ সময় মাহমুদা চিৎকার দিয়ে ঘরের বাইরে বেড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তার চিৎকার শুনে শ্বশুর এগিয়ে আসলে তাকেও দা দিয়ে কোপ দেন নান্টু সিকদার। পরে বড় ভাই মিন্টু সিকদার এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে আহত করেন। স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির পাশে একটি বাগানে দৌড়ে পালান মাহমুদা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। সেখানে গিয়েও উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করেন স্বামী নান্টু সিকদার। নিহতের শরীরে ৩০টির বেশি কোপের আঘাত পাওয়া গেছে।

নিহত মাহমুদার ভাই নূরে আলম বলেন, ৫-৬ বছর আগে নান্টু সিকদারের সঙ্গে মাহমুদার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। নান্টু ঠিকমতো কাজ না করায় সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়। এক সপ্তাহ আগে রাগ করে মাহমুদা বাবার বাড়িতে চলে আসে। কয়েকদিন পরে নান্টু শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসে। দুদিন শ্বশুরবাড়িতে থাকার পর স্ত্রীকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু মাহমুদা বাড়িতে যেতে অস্বীকার করে। স্বামীকে বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত কাজে যাওয়ার অনুরোধ করে। শাশুড়ি তাকে মোবাইলে বাড়িতে যেতে অনুরোধ করলে বুধবার বিকেলে মাহমুদা স্বামীর বাড়িতে যায়। রাতে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সন্তান না হওয়ায় দুজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর