ফেনসিডিল রাখার দায়ে ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা হওয়া মেহেদী হাসান নামে এক যুবকের দণ্ডাদেশ মওকুফ করেছেন আদালত। বিনিময়ে অসুস্থ মায়ের সেবা করাসহ তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। তিনি আদালতের নির্দেশনা মানছেন কিনা তা দুই বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করবে সমাজসেবা অফিস।

বুধবার (১৫ জুন) বিকেলে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় এ রায় দেন।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, আসামি মেহেদী হাসান জীবনে প্রথমবার এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন এবং বিগত দিনে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় পুনর্বাসনের সুযোগ দিয়ে বিজ্ঞ আদালত ওই আসামিকে লঘু দণ্ড দিয়েছেন।

আদালতের আইনজীবী সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু বলেন, পরবর্তীতে কখনো এমন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে না, ঘরে অসুস্থ মায়ের সেবা করতে হবে, ১০০টি ওষুধি-ফলজ-বনজ গাছ রোপণ করার শর্তে দণ্ডিত মেহেদী হাসানকে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। তবে শর্ত ভঙ্গ করলে তখন থেকেই ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ড কার্যকর হবে।

তিনি জানান, মেহেদী হাসান বরিশাল নগরীর ২১নং ওয়ার্ডের ভাড়াটিয়া এবং মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর এলাকার আলাউদ্দিন খানের ছেলে। ঘরে তার মা গুরুতর অসুস্থ। মেহেদী হাসান ছাড়া সেই মায়ের সেবা করার কেউ নেই। এসব বিবেচনা করেছেন বিজ্ঞ আদালত।

আদালত থেকে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ অক্টোবর সিটি করপোরেশনের ২২নং ওয়ার্ডের ঈদগাহ লেনের একটি ভাড়া বাসা থেকে মেহেদী হাসানকে ১৫ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসআই সুজিত গোমস্তা বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার অপর আসামি ছিলেন করিম কুটির এলাকার নেহার মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া আবুল খায়েরের ছেলে রুবেল হাওলাদার। ডিবির এসআই মঞ্জুরুল হাসান দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দেন। ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় আজ।

আসামি মেহেদী হাসান বলেন, গ্রেপ্তারের পর থেকেই আমি আমার দোষ স্বীকার করেছি। বিজ্ঞ আদালতেও আমি আমার দায় স্বীকার করেছি। এজন্য এই মামলার কোন সাক্ষীর দরকার হয়নি। ওই ঘটনাটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় একটি ভুল ছিল। তবে আদালত আমার ওপরে সদয় হয়েছেন। আদালত যে সুযোগ আমাকে দিয়েছেন, সেই শর্তগুলো আমি পুঙ্খানুপুঙ্খ পালন করব। আমি একজন ভালো মানুষ হয়ে বাঁচব। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর