পিরোজপুরের নাজিরপুরে নাইম মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করার পর উল্টো মামলায় কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১২ জুন) বিকেলে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মুহিদুজ্জামান। 

নাইম মোল্লাকে কুপিয়ে আহত করে তারপর উল্টো মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার পরিবারের লোকজন। শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ নাইমের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন বলে তারা দাবি করেন। 

মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল বেসরকারি চাকরিজীবী নাইম মোল্লা তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিজ বাড়ি নাজিরপুর উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামে যান। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেড় ধরে প্রতিপক্ষ নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে নাইম মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। আহত নাইম মোল্লাকে উদ্ধার করে প্রথমে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। 

ঘটনার তিন দিন পরে উল্টো নাইম মোল্লাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে পরিকল্পিতভাবে নাজিরপুর থানায় মামলা করে প্রতিপক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। ওই মামলায় অসুস্থ নাইম মোল্লাকে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। 

নাইমের ভাই শাহীন মোল্লা জানান, জমি নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেড় ধরে দীর্ঘদিন ধরে মো. নজরুল ইসলাম নজীব তার লোকজন নিয়ে বিভিন্নভাবে নাইম মোল্লার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তার ভাই নাইম মোল্লাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। তার চিকিৎসা দরকার।  কিন্তু আদালতে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করায় অনেকটা হতাশ তাদের পরিবার। 

নাইমের বোন বিউটি জামান জানান, তার ভাই নাইম মোল্লা বেসরকারি একটি কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার (কর্মাশিয়াল) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি বাবার মৃত্যুবার্ষিকী পালনে বাড়িতে আসলে প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পনা করে তাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ঘটনার কয়েকদিন পরে থানা ম্যানেজ করে উল্টো আহত নাইম মোল্লাকে প্রধান আসামি করে মামলা দেয়। গুরুতর অসুস্থ নাইম মোল্লা কারাগারে আছে। তার জামিনের আবেদন করেও তার জামিন পাওয়া যায়নি। 

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ আলম জানান, রোববার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নাইম মোল্লার জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা বরাবরই বলেছি আসামি অসুস্থ, তার চিকিৎসার দরকার। ভিকটিমই যখন আসামি, সে বিষয়ে আদালত জামিনের বিষয়টি আমলে নিতে পারতেন। 

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো. আলাউদ্দিন জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। 

আবীর হাসান/আরএআর