‘এ কেমন বৃষ্টি আইলো, তিন তিন জনরে একসাথে নিয়া গেল’
‘এ কেমন বৃষ্টি আইলো, তিন তিন জনরে একসাথে নিয়া গেল। আমার বিমলা ঘরের মেঝে পরিষ্কার করছিল। বাড়ির কেচিগেটে বিদ্যুতের তার লেগে বিদ্যুতের সংস্পর্শে আসে বিমলা। তার কাঁপুনি দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ভেবে আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাসন্তী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে বাসন্তী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। একইভাবে মনিও বিদ্যুতের সংস্পর্শে এসে তিনজনই মারা যায়। মনির ছোট ছোট বাচ্চাদের কী হবে?’
স্ত্রী বিমলা ঘোষসহ তিনজনের দাহ শেষে আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন স্বামী রঞ্জিত ঘোষ। এ সময় মৃতদের স্বজনদের আহাজারিতে শ্মশানের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় পৌর শ্মশানের পুরোহিত শান্তি রঞ্জন ঘোষাল সকল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে একসঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করা তিন গৃহবধূর দাহ কার্য সম্পন্ন করেন। মৃতদের স্বজনরা মুখাগ্নির মাধ্যমে দাহ কার্যক্রম শুরু করেন।
পৌর শ্মশানের সুপারভাইজার রাকেশ লাল বেগী ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য জানান।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের আখরা মন্দির এলাকায় একই পরিবারের তিন জা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি ও একই সঙ্গে গভীর শোক প্রকাশ করছি। এ ঘটনাটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা, আমি সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই। সকলে সচেতন হলে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে নগরীর দেওভোগ এলাকার মৃত বৃন্দাবন ঘোষের বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে তার তিন পুত্রবধূর মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- রঞ্জিত ঘোষের স্ত্রী বিমলা রাণী ঘোষ (৫৩), নিখিল ঘোষের স্ত্রী বাসন্তী রাণী ঘোষ (৪২) ও দীপক ঘোষের স্ত্রী মনি রাণী ঘোষ (৩৮)। তারা সকলেই সম্পর্কে জা হন।
আরএআর