করোনাকালে অনলাইনে ১৬০০ মিটিং করেছেন প্রধানমন্ত্রী : পলক
করোনাকালীন অনলাইনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার ৬০০ ডিজিটাল মিটিং করেছেন বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকালে রংপুর মহানগরীর ৯ নং ওয়ার্ডের খালিশাকুড়ি বিল এলাকায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার কারণে করোনার ধাক্কা সামলেও দেশকে এগিয়ে নিতে পেরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনায় বিশ্ব যখন স্থবির ছিল, তখন অনলাইনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার ৬০০ ডিজিটাল মিটিং করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আমরা এখন ডিজিটাল এবং উন্নত। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া আমাদের অন্যতম ভিশন।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশের মানুষকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, খুন, লুটপাট, অপরাজনীতি ছাড়া কোনো কিছু দিতে পারেনি। তাদের কাছে জনগণকে স্বপ্ন দেখানোর কিছু নেই। দুঃখজনক পরাজয় বরণ করার শঙ্কায় তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসতে ভয় পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দেশের তরুণ, নবীন-প্রবীণরা আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। জনগণ বিপুল ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় এনে ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রংপুরের কৃতি সন্তান, ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয় রংপুরের উন্নয়ন তার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তার প্রতিশ্রুতি ছিল তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ঠিকানা হবে রংপুরের অত্যাধুনিক ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া হাইটেক পার্ক। ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ একর জমির ওপর পার্কটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আজ উদ্বোধন হলো। আশা করছি আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে।
পলক বলেন, হাইটেক পার্ক থেকে প্রতি বছর ৩ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি হবে। রংপুর বিভাগের ৮ জেলার তরুণদের আর ঢাকা কিংবা বিদেশমুখী হতে হবে না। শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে মেধা নির্ভর অর্থনীতিতে যাওয়ার জন্য এই হাইটেক পার্ক হবে সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশের চালিকাশক্তি। লাখ লাখ তরুণের কর্মসংস্থানের ঠিকানা হবে এ হাইটেক পার্ক।
এর আগে সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া হাইটেক পার্ক নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক উন্মোচন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শবিষয়ক তথ্যচিত্র ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের তথ্য চিত্র এবং প্রকল্পের উদ্যোগে হাইটেক পার্ক রংপুরের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
এ সময় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, জেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্ক নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একেএএম ফজলুল হক, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় অর্থায়নে রংপুরসহ বাংলাদেশের ১২টি জেলায় হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে এবার রংপুরে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। কথা ছিল ২০১৮ সালে রংপুরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ শুরু হবে। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরুর আগেই ২০২০ সালের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। এ নিয়ে হতাশ ছিল রংপুরবাসী। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খলিশকুড়ি এলাকায় বহুল প্রতীক্ষিত হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হওয়ায় আনন্দিত রংপুরবাসী।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল সারা দেশের জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্ক প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে রংপুর নগরীর খালিশাকুড়ির বিল এলাকায় ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ একর জমির ওপর ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া হাইটেক পার্ক নির্মাণ হচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এ হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি