মনিরুল ইসলাম সপরিবার ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন কক্সবাজারে। হোটেলের নাম খুঁজে না পেয়ে গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে কলাতলী ডলফিন মোড়ে আসেন। কিন্তু গুগল ম্যাপ বলছে সার্ক মোড়ে অবস্থান করলেও সাইনবোর্ডে লেখা আছে ডলফিন মোড়। তা নিয়ে মনিরুলের মনে জাগে নানা প্রশ্ন।

ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তার পাশে রেখে ভাস্কর্যটি ঘুরে ঘুরে দেখেন। ভাস্কর্য ও গুগল ম্যাপে হাঙরের মোড় দেখালেও মানুষের মুখে ও সাইনবোর্ডে ডলফিন মোড় লেখা দেখে হতাশ হন তিনি।

মনিরুল জানান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার পথে কলাতলী চত্বরে হাঙরের ভাস্কর্য স্থাপন করা হলেও নাম রাখা হয়েছে ডলফিন মোড়। এটা কীভাবে হয়? এ কারণে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা বিভ্রান্তিতে পড়ে যাবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমি নিজেই গুগল ম্যাপে শার্ক মোড় দেখে থামলেও কিন্তু মানুষ বলছে ডলফিন মোড়। এই নামকরণ নিয়ে আমার মতো অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। তাই সঠিক নামটা সবার জানা উচিত।

জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোনের সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে শহরের প্রবেশমুখ কলাতলীতে স্থাপন করা হয় ‘হাঙর ভাস্কর্য’। ঢাকা ব্যাংকের সৌজন্যে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয়া এ ভাস্কর্যটি। তবে ভাস্কর্যটি হাঙরের হলেও ‘ডলফিন ভাস্কর্য’ নামেই বেশি পরিচিত। এ কারণে কলাতলী মোড়টি সবার কাছে ‘ডলফিন মোড়’ হিসেবে চিহ্নিত।

ভাস্কর্যটি বিভিন্ন প্রজাতির হাঙরের প্রতিমূর্তি দিয়ে সাজানো। পর্যটন এলাকার প্রবেশমুখে এসব হাঙরের ভাস্কর্য দেখে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা মনে করেন ভুল ঠিকানায় চলে এসেছেন।

স্থানীয় কলাতলী আর্দশ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ ছৈয়দ নূর বলেন, বেশির ভাগ নামের সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকে না। কলাতলী ডলফিন মোড়ও ঠিক তা-ই। এটা মানুষের মুখে মুখে বলার মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করে ডলফিন মোড়। কিন্তু বাস্তবে এখানে ডলফিনের অস্তিত্ব নেই, আছে বিশাল বিশাল হাঙরের ভাস্কর্য।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্যসচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রবেশমুখে কক্সবাজারের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলার ধরার পরিবর্তে বিকৃতি করা হয়েছে। ভয়ংকর হাঙরের সঙ্গেও কক্সবাজারের ঐতিহ্য কখনো জড়িত ছিল না। কিন্তু ডলফিনের ভাস্কর্য তৈরি করে নামকরণ করা হয় হাঙর মোড়। এটা দুঃখজনক।

এত বড় ভুলের পরও দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এটি শুদ্ধ করে নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। এতে কক্সবাজারের প্রবেশমুখের এ ভাস্কর্য নিয়ে অনেকটা বিরূপ প্রভাব পড়ছে পর্যটনশিল্পে।

সাইদুল ফরহাদ/এনএ