চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাসে একটি রক্তস্নাত দিন আজ
আজ ২০ মে। চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাসে একটি রক্তস্নাত দিন। ১৯২১ সালের এই দিনে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ব্রিটিশ বাহিনীর নেতৃত্বে আসাম গোর্খা পুলিশ শত শত চা-শ্রমিককে হত্যা করেছিল। সেই রক্তস্নাত দিনের আজ ১০১তম বার্ষিকী।
দিবসটিকে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবিসহ বিভিন্ন দাবিতে হবিগঞ্জ জেলার কয়েকটি চা-বাগানে নানা কর্মসূচি পালিত হবে আজ শুক্রবার (২০ মে)। বিকেল ৪টায় চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি চা-বাগানের শহিদবেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে শুরু হবে প্রতীক থিয়েটারের দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার।
বিজ্ঞাপন
শ্রমিক ইতিহাসের নির্মম এ হত্যাযজ্ঞটি ঘটে ১০০ বছর আগে। যেটি ১৮৮৬ সালের ৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটে শ্রমিক নিধনের ঘটনাকেও হার মানায়।
সেদিন প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক আসাম ও সিলেট অঞ্চল থেকে নিজ দেশ বিহার, উড়িষ্যা, মাদ্রাজ, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ফিরে যেতে ১৭ দিন পায়ে হেঁটে চাঁদপুরে লঞ্চঘাটে গিয়েছিলেন। পণ্ডিত গঙ্গা দয়াল দীক্ষিত ও পণ্ডিত দেওশরনের নেতৃত্বে ওই দিন চা-শ্রমিকরা ‘মুল্লুকে চল’ স্লোগান দিয়ে দীর্ঘযাত্রা শেষে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে পৌঁছান।
পরে ক্লান্ত আর নিরস্ত্র এসব চা-শ্রমিককে হত্যা করেছিল আসাম রাইফেলসের গোর্খা বাহিনী। গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জে হতাহত শ্রমিকদের পেট কেটে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। যাতে লাশ নদীতে ভেসে না ওঠে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও যেন এ গণহত্যার কথা প্রকাশ না পায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিককে হত্যা করা হয়।
তাই চা-শ্রমিক আন্দেলনকে শক্তিশালী করতে ২০০৮ সাল থেকে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে এ দিনটিকে পালন করে আসছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন।
প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস জানান, তাদের অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, নাটক, সংগীত ও চা-বাগানের নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে বিভিন্ন পরিবেশনা।
ঐতিহাসিক ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলনের ১০১তম বর্ষ উপলক্ষে ২০ মে কে চা-শ্রমিক দিবস ঘোষণা, ন্যূনতম মজুরি ৫০০ টাকা ও ৫ কেজি রেশন, ভূমি অধিকার নিশ্চিতসহ কয়েকটি দাবিতে আলোচনা সভা ও স্মারকলিপি প্রদান করবে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনসহ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন।
এনএ