কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়ে আপ্লুত নোয়াখালীর ৮৬ তরুণ-তরুণী
টানা ২৩ দিনের সংগ্রাম। একের পর এক ধাপ পার হয়ে সফলতার শেষ সিঁড়িতে আরোহণ করলেন ৮৬ জন তরুণ-তরুণী। গতকাল বুধবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নোয়াখালী জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট পুলিশ কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এ সময় বিনা টাকায় কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তরুণ-তরুণীরা। অভিভাবকরা বিশ্বাসই করতে পারেননি তাদের সন্তানদের টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি হবে। কিন্তু সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে জেলার ৮৬ তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেওয়া হয়। ব্যাংক ড্রাফটে ১০০ টাকা জমা দিয়ে পুলিশে প্রায় ৫০০০ তরুণ-তরুণী অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ১৮৫ জন। সব শেষে স্বপ্ন এসে ধরা দেয় ১২ জন তরুণী ও ৭৪ জন তরুণের হাতে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের আবদুল মান্নানের ছেলে বেলাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কখনো কল্পনাই করতেই পারিনি যে ১২০ টাকায় চাকরি পাব। ঘুষ ছাড়া চাকরি পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমার বাবা একজন কৃষক। আমার এ চাকরিটি খুব দরকার ছিল। আশা করছি এখন আমি পরিবারের হাল ধরে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারব। একই সঙ্গে দেশের সেবাও করতে পারব।
নিয়োগপ্রাপ্ত নোয়ান্নয়ই ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে ফাতেমা আক্তার ফারহানা উচ্ছ্বসিত হয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবা পুলিশে চাকরি করেছেন। বাবাকে দেখে এই মহান পেশায় চাকরির আবেদন করেছি। গতবার আবেদন করে বাদ পড়েছি। এবার কঠোর প্রস্তুতি নিয়ে আবেদন করেছি।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আইজিপি বেনজীর আহমেদ স্যারের দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে আমূল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও সততার এ বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এসব মেধাবীকে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফলাফল ঘোষণার সময় ওদের হৃদয়ের কম্পন টের পাচ্ছিলাম। ঘোষণায় নিজের রোলটা শুনে একে একে ৮৬ জনের মুখে বিজয়ের হাসি ফোটে। যে হাসি দেখার জন্য আমরা পরীক্ষা কমিটির তিনজন লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাগ, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. মইনুল ইসলাম (পিপিএম) অপেক্ষায় ছিলাম। গত দুই সপ্তাহ ধরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহসহ ৩৫০ জন সদস্য কাজ করেছি।
হাসিব আল আমিন/আরএআর