সাতক্ষীরায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় জেলা পুলিশ লাইন্সের মিলনায়তনে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। চূড়ান্ত তালিকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন ৫৫ জন। এছাড়া অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন আরও আটজন। 

নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আটজন নারী ও ৪৭ জন পুরুষ রয়েছেন। নারী কোটায় আটজন, সাধারণ কোটায় ২৯ জন, পোষ্য কোটায় চারজন ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৪ জন রয়েছেন।

সাতক্ষীরায় ২০২২ সালের পুলিশে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

জেলা পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে অনলাইনে ১ হাজার ৬০ জন কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেন। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্তভাবে ৪৩৬ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে উত্তীর্ণ হন ১৭৯ জন। পরে চূড়ান্ত ফলাফলে নিয়োগ পেয়েছেন ৫৫ জন। আটজন নারী-পুরুষকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে।

নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন শহিদুজ্জামান নাঈম। তিনি বলেন, ঘুষ ছাড়াই পুলিশে চাকরি পাওয়া যায় সেটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। ধারণা করতে পারিনি, অবশেষে টাকা ছাড়া আমি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি পুলিশ বিভাগকে আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য। 

নারী কোটায় প্রথম হয়েছেন রানুমা খাতুন। তিনি জানান, স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আমার খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা। এই টাকায় চাকরি পাব ভাবতে পারিনি। আমিও স্বচ্ছতার সঙ্গে জনগণের সেবা করতে চাই।

সাধারণ নারী কোটায় নিয়োগ পাওয়ায় দিনমজুর রশিদ মোড়লের পরিবারে এখন আনন্দের বন্যা বইছে। মেয়ে মুক্তা পারভীন পুলিশের চাকরি পেয়েছে। মুক্তা পারভীন বলেন, আমি দিনমজুর পরিবারের সন্তান। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল একদিন পুলিশে চাকরি করব। সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে বলে কেঁদে ফেলেন তিনি। 

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে কার্যক্রম হয়েছে যেন কেউ কোন প্রশ্ন তুলতে না পারে। সেইসঙ্গে যোগ্য প্রার্থীরাই যেন নিয়োগ পায়। সাতক্ষীরাবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইজিপি স্যারের নির্দেশে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নারী-পুরুষ মিলে আটজনকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে। চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়া ৫৫ জনের মধ্যে যদি কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিকেলে বাদ পড়েন, তবে সেখান থেকে চূড়ান্ত তালিকায় তাকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

আকরামুল ইসলাম/এসপি