নিহত জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়া

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে চার বছরের শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়াকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি শুটার রিমন (২৩) গ্রেপ্তার হলেও উদ্ধার হয়নি হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। এছাড়াও ঘটনার আট দিনেও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাদশা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা শুটার রিমনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এ সময় সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি এলজি, একটি কার্তুজ ও ১১টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, ২১ হাজার টাকা দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছে রিমন। পুরো টাকা দিয়েছে মহিন। আমরা কার থেকে কিনেছে এসব তথ্য পেয়েছি। হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। মূল পরিকল্পনাকারী বাদশাহসহ বাকি আসামিদের ধরতে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

তিনি বলেন, হাজিপুর ইউনিয়নের পূর্ব হাজিপুর গ্রামে আবু জাহেরের বাড়িতে বাদশা ও ফিরোজ নামে দুজনের জমি নিয়ে পূর্বশত্রুতা ছিল। এ নিয়ে ১৩ এপ্রিল পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। সামাজিকভাবে বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে আবু জাহের সেখানে সত্য কথা বলেন, যা বাদশার বিপক্ষে যায়। পরে বাদশা আবু জাহেরকে হত্যা করার জন্য আসামিদের ভাড়া করেন। আসামিরা আবু জাহেরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ১৩ এপ্রিল বিকেলে সন্ত্রাসী রিমন ও তার বাহিনীর সদস্যরা আবু জাহের ও তার কোলে থাকা শিশুকন্যা তাসপিয়াকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে বাবা-মেয়ে দুজনই গুলিবিদ্ধ হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায় তাসপিয়া।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ এপ্রিল বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয় বাবার কোলে থাকা শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়া। গুলিবিদ্ধ হন শিশুটির বাবা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহেরও। গুলিতে তার ডান চোখ নষ্ট হয়ে যায়।

ঘটনার পরদিন তাসপিয়ার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে রিমন, মহিন, বাদশাসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে মামলার প্রধান আসামি শুটার রিমনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব- ১১। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

হাসিব আল আমিন/আরএআর