নোয়াখালীতে র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস শোরুম থেকে দামি ব্র্যান্ডের নামে নকল পণ্য ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কে নির্দেশ দেয়।

রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে সফিকুল ইসলাম নাজিম (৩৮) নামে এক গ্রাহক নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক নম্বর আমলি আদালতে এ মামলা করেন। মামলায় র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জেএম একরাম হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের জিএম (বিক্রয় ও বিপণন) জানে আলম, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মার্কেটিং মো. ওমর ফারুক, সনি-র‍্যাংসের পরিবেশক হোসেন ইলেকট্রনিকসের মালিক কাজী মোজাম্মেল হোসেন, সনি-র‌্যাংসের নোয়াখালী জোনের ম্যানেজার ফরিদ উদ্দিন ইমাম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. শামীম হোসেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নুর আলম জিকু ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই কোম্পানি মানুষের কাছে নকল পণ্য দিয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে একজন ভুক্তভোগী এসে অভিযোগ করলে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এ মামলার আবেদন করি। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি করেছেন সফিকুল ইসলাম নাজিম। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মধুরামপুর এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বাদী সফিকুল ইসলাম নাজিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে ২০২১ সালে ৮ মে জেলা শহর মাইজদীর র‌্যাংসের পরিবেশক ‘হোসেন ইলেকট্রনিকস’ থেকে মালয়েশিয়ান কেলভিনেটর কেএসভি ৩৩ এফএফ মডেলের ফ্রিজ ক্রয় করি। বাসায় যাওয়ার পর কোথাও মালয়েশিয়ায় তৈরি কোনো মনোগ্রাম পাইনি। এরপর ফ্রিজে নানা ত্রুটি দেখা দেয়। শো-রুমে অভিযোগ দিলে তারা মাইজদী সনি-র‍্যাংগস কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সফিকুল ইসলাম নাজিম আরও বলেন, একই ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল নোয়াখালীতে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় মামলা হয়েছে। সবগুলো মামলা পিবিআইকে তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। তাই নোয়াখালীসহ দেশের কোথাও যেন তারা কারও সঙ্গে এমন প্রতারণা না করতে পারে, এজন্য আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে সনি-র‍্যাংগসের পরিবেশক হোসেন ইলেকট্রনিকসের মালিক কাজী মোজাম্মেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সনি-র‍্যাংসের পরিবেশক। কোম্পানি যেভাবে প্রোডাক্ট দিচ্ছে, আমরা গ্রাহককে সেভাবেই দিচ্ছি। মামলা যেহেতু হয়েছে, এ বিষয়ে কোম্পানি জবাব দেবে। আমি কিছু বলতে পারব না।

অভিযোগের বিষয়ে সনি-র‌্যাংগসের নোয়াখালী জোনের ম্যানেজার ফরিদ উদ্দিন ইমাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্লোবাল মার্কেটের ফলে আমরা লোকাল কারও মাল বিক্রি করতে পারি। বাজারে এমন নামে-বেনামে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা এভাবে পণ্য বিক্রি করছে। যেহেতু মামলা হয়েছে তাই কর্তৃপক্ষ মামলার জবাব দেবে।

এ বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালত থেকে আমাদের কাছে কাগজপত্র আসলে আমরা তদন্ত করে আইনানুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিব।

হাসিব আল আমিন/আরআই