অবশেষে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে দখল-দূষণে মৃতপ্রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া টাউন খাল। খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার এবং খনন কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত ১১ এপ্রিল টাউন খালে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। পরিচ্ছন্নতা অভিযান শেষে খালটি পুনঃখননের কাজ শুরু হবে। এতে করে প্রাণ ফিরবে প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঐতিহ্যবাহী টাউন খালে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া টাউন খালটি ব্রিটিশ শাসনামলে পানি নিষ্কাশন ও নৌযান চলাচালের সুবিধার্থে খনন করা হয়। শহরের জগৎ বাজার থেকে শুরু হয়ে স্থানীয় গোকর্ণঘাট পর্যন্ত টাউন খালটির দৈর্ঘ্য ৪.৮০ কিলোমিটার। এর গড় প্রস্থ ৯০ মিটার। খালটি দুই দিক থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেক ঐতিহ্য তিতাস নদীতে গিয়ে মিশেছে।

১০-১২ বছর আগেও টাউন খাল দিয়ে যাত্রী ও পণ্যবোঝাই ছোট-বড় নৌকা চলাচল করেছে। এছাড়া খালের পানিতে গোসল করতেন স্থানীয়রা। তবে খালের দুই পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা ও দূষণের কারণে টাউন খাল এখন মৃতপ্রায়। শহরের বাসা-বাড়ি ও হোটেলের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় টাউন খালে। এতে করে দিন দিন সরু ড্রেনে পরিণত হয় খালটি। এটিকে দখল-দূষণমুক্ত করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল জেলাবাসী।

নদী নিরাপত্তা বিষয়ক সামাজিক সংগঠন নোঙর এর জেলা শাখার সভাপতি শামীম আহমেদ জানান, তারা দীর্ঘ দিন ধরে খালের সীমানায় গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ এবং দূষণমুক্ত করে খালটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এজন্য তারা বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছেন। অবশেষে খালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খনন কাজ শুরু হয়েছে। এরপর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, ঐতিহ্যবাহী টাউন খালটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খনন কাজ চলছে। এরপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় খালের পাড় ঘেঁষে করা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।

আজিজুল সঞ্চয়/এসপি