নাসিরনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার সুস্থ সবল এক স্কুল শিক্ষিকাকে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে মৃত দেখানো হয়েছে। এতে ওই শিক্ষিকার বেতন-বিল পাওয়া নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য গত বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ওই শিক্ষিকার স্বামী স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের ফজলুল হকের স্ত্রী মারুফা বেগম সম্প্রতি জানতে পারেন তাকে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে মৃত দেখানো হয়েছে। অথচ তিনি দিব্যি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্ত কাজকর্ম করে যাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মারুফা ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন কার্যক্রমের আওতায় ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর জন্ম ১৯৮২ সালের ২৯ জানুয়ারি এবং ভোটার আইডি নম্বর ১২১৯০৫১৭১৮৩৯৭।

মারুফা ২০১২ সালের ৩ মে রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন। অথচ নাসিরনগর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মারুফাকে মৃত দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি মারুফার পরিবারের নজরে আসে। এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে বেতন ও বিল পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন মারুফা।

মারুফার স্বামীর করা আবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-বিল দেয়ার প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নিয়ে ইএফটির মাধ্যমে মাসিক বেতন পাওয়ার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে আবেদন করতে যান মারুফা। কিন্তু সার্ভারে তার আবেদন প্রক্রিয়াটি ভুল দেখায়। পরে গত বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করতে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, নির্বাচন কার্যালয়ের সার্ভারে মারুফা বেগমের স্ট্যাটাস মৃত দেয়া রয়েছে।

মারুফা বেগম বলেন, বেতনের জন্য আবেদন করতে গিয়ে দেখি আমি মৃত! নির্বাচন কার্যালয়ের লোকজনের ভুলের মাশুল আমাকে গুনতে হচ্ছে। আমি এখন ইএফটির মাধ্যমে বেতন-বিল তুলতে পারছি না। তারা জীবিতকে কীভাবে মৃত বানিয়ে দিল সেটি বুঝতে পারছি না। 

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল ওই শিক্ষকের শ্বাশুড়ি জয়বুন্নেছা বেগম (৭০) মারা যান। পরবর্তীতে ভোটার তালিকায় মৃতের নামের জায়গায় জয়বুন্নেছা বেগম লেখা হলেও পরিচয়পত্রের নম্বরের জায়গায় ভুলবশত মারুফার পরিচয়পত্রের নম্বর দেয়া হয়েছে। দুজনের পরিচয়পত্রের নম্বরের মধ্যে শুধু শেষের একটি সংখ্যা ভিন্ন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ভুলবশত পরিচয়পত্রের কোনো সংখ্যা পরিবর্তনের কারণে এমন হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর