কেন্দুয়া-নেত্রকোনা সড়কের বেহাল দশা

সড়কজুড়ে খানাখন্দ। একটু বৃষ্টিতে পানিভর্তি হচ্ছে এসব খানাখন্দ। অসতর্ক হলে ঘটছে দুর্ঘটনা। বিকল হচ্ছে যানবাহন। এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে কেন্দুয়া-নেত্রকোনার ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে। ফলে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন এ সড়কটি ভালো থাকলে মাত্র ৪০ মিনিটে ২৮ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দেয়া যায়। বর্তমানে বেহালদশার কারণে সময় ব্যয় হচ্ছে ২ ঘণ্টারও বেশি।

শুধু তাই নয়, ভাঙার কারণে যানবাহনের চালকরাও যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। ৬০ টাকা সিএনজি ভাড়ার পরিবর্তে প্রত্যেক যাত্রীকে বর্তমানে ৮০ টাকা করে ভাড়া গুণতে হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।

কেন্দুয়া থেকে নেত্রকোনাগামী সিএনজি যাত্রী নুরুল আমিন বলেন, জেলা শহরে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা এটি। তাই প্রয়োজনের তাগিদে ভাঙা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছি। কেন্দুয়া থেকে নেত্রকোনা পর্যন্ত নির্ধারিত সিএনজি ভাড়া ৬০ টাকা। কিন্তু ভাঙা সড়কের কারণে সিএনজি চালকরা ৮০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে। এর কম হলে তারা যাত্রী নিয়ে যেতে চায় না। তাই বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভাঙা সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে।

সড়কে ছোট বড় খানাখন্দ

তিনি আরও বলেন, সড়কটা এতটাই ভেঙে গেছে একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে গাড়িতে ঠিকমতো বসে থাকা দায়। অতিরিক্ত ঝাঁকুনির ফলে অসুস্থ হতে হয়। আর রোগী কিংবা গর্ভবতী নারীদের নিয়ে তো এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এ সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী কেন্দুয়া পৌর শহরের বাসিন্দা এবং নেত্রকোনা জেলা জজকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আ.ক.ম বজলুর রহমান তুলিপ ও সোহেল আমিন সীমাহীন ভোগান্তির কথা তুলে ধরে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সচিত্র স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।

তারা জানান, এ সড়কে আমরা প্রতিদিনই চলাচল করি। সময় ও অর্থের অপচয়ই শুধু নয়, অনেকেই সময় মতো কাজে যেতে পারি না। সীমাহীন দুর্ভোগের কথা বলার মতো ভাষা নেই। যোগাযোগের দিক দিয়ে এতো অবহেলিত বাংলাদেশে আর কোনো জেলা আছে কিনা- তা আমাদের জানা নেই।

সড়কে পানি জমে দুর্ঘটনা হচ্ছে 

এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী সিএনজি চালক রিপন মিয়া বলেন, ভাঙা সড়কের জন্য আমরা চালকরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছি। গাড়ি গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি লাগলেই যাত্রীরা বকাবকি করেন। আবার ভাঙা রাস্তার কারণে কয়েকদিন পর পরই গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্র নষ্ট হচ্ছে। ৪০ মিনিটের রাস্তা যেতে লাগে ২ ঘণ্টা। তাই ইচ্ছে করেই আমাদের ৬০ টাকার বদলে ৮০ টাকা করে ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করতে হচ্ছে।  

নেত্রকোনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, এ সড়কটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে। এজন্য সব কাজ চলছে। তিনটি প্যাকেজে কাজ হবে সড়কটির। এর মধ্যে দুটি প্যাকেজের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিলে কাজ শুরু হবে।

সড়কে জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজটি শুরু করতে। তারপরও কাজ শুরু করতে আরও তিন-চার মাস লেগে যেতে পারে।

এসপি