বরগুনায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে এক নারী জুতাপেটা করছেন— এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ওই নেতার নাম শাহ আলম। তিনি সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহ আলম একটি ঘরে একজন নারী ও কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে রয়েছেন। কথোপকথনের এক পর্যায়ে বোরকা পরা ওই নারী তাকে পেটাতে থাকেন।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার রাতে বরগুনা পৌর শহরের ডিকেপি রোড এলাকার একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

জুতাপেটার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ও বানোয়াট বলে অভিযোগ আওয়ামী নেতা শাহ আলমের। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে একটি কোম্পানির ডিলারশিপ নেবে। তাই শনিবার আমি ৬০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিতে বরগুনা সদরে গিয়েছিলাম।’

‘ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টাকা জমা দিতে পারিনি। পরে তারাবির নামাজ পড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিই। কিছুক্ষণ পর দুজন লোক এসে আমাকে বলে আমার এলাকার কে যেন অসুস্থ, আমাকে যেতে হবে। আমি তাদের সাথে  যাই। কিছুক্ষণ পর তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে আমি সরে পড়তে চাই।’

‘তবে তারা আমাকে জোর করো ডিকেপি রোডের একটি বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় গিয়ে দেখি আরও কয়েকজন লোক সেখানে। পরে এক বোরকা পরা নারী এসে আমাকে জুতা দিয়ে মারতে থাকে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা আমার ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং দুইদিনের মধ্যে ২ লাখ টাকা না দিলে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। আমি তাদের কাউকে চিনি না।’

তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে নয়ন বন্ডের লোক। এ বিষয়ে কাউকে কিছু বললে আমাকে ও আমার পরিবারকে শেষ করে ফেলবে। তাই আমি থানায় পর্যন্ত অভিযোগ করিনি। বিষয়টি আমি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সেক্রেটারিকে জানিয়েছি। তাদের নির্দেশক্রমে আমি পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। আমাকে পরিকল্পিতভাবে কেউ ফাঁসিয়েছে।’

স্থানীয় আওয়ামী নেতা ও ইউপি সদস্য মো. পলাশ বলেন, ‘তাকে (শাহ আলম) কখনো কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে দেখিনি। আমার ধারণা তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ ওলি বলেন, ‘আমি ভিডিওটি এখন পর্যন্ত দেখিনি। খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।  অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খান নাঈম/আরএইচ