কবরস্থানের মালিক জানেন না, বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করলেন চেয়ারম্যান
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবুর বিরুদ্ধে কবরস্থানের নামে বরাদ্দ হওয়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউনিয়নের খামার চান্দের ভিটা বাকি মেম্বারের বাড়ির পাশের কবরস্থানের নামে বরাদ্দ হওয়া টিআর সাধারণ প্রকল্প গোপন করে এ অর্থ আত্মসাৎ করেন তিনি।
তথ্য অধিকার আইনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২০২১-২২ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) সাধারণের প্রথম পর্যায়ে ৩২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দের পরিমাণ ২৮ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৩ টাকা। এর মধ্যে বোয়ালী ইউনিয়নের ‘খামার চান্দের ভিটা বাকি মেম্বারের বাড়ির পার্শ্বে কবরস্থানে মাটি ভরাট ও প্রাচীর নির্মাণ’ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। প্রকল্পটির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবু।
বিজ্ঞাপন
প্রাপ্ত তথ্যমতে সরেজমিনে জানা যায়, এই প্রকল্পের বিপরীতে ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সম্প্রতি প্রকল্প চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবু প্রকল্প গোপন করে ওই কবরস্থানে ৭০ ট্রাক (কাকড়া) মাটি কাটেন। যার প্রতি ট্রাক মাটির দাম ৮০০ টাকা করে। সে হিসাবে চেয়ারম্যান ওই কবরস্থানে ৫৬ হজার টাকার মাটি কেটে দেন।
অভিযোগ রয়েছে, ওই কবরস্থানের নামে সরকারিভাবে টিআরের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা জানানো হয়নি কবরস্থানের মালিক কর্তৃপক্ষকে। কবরস্থান মালিকদের অভিযোগ, প্রকল্প গোপন করে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে কবরস্থানে মাটি ভরাটের কথা বলে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
ওই কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা রাজু মিয়া বলেন, এটি আমাদের পারিবারিক কবরস্থান। কিছুদিন আগে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবু আমাদের কবরস্থানে ৭০ কাকড়া (ট্রাক) মাটি কিনে দিয়েছেন। প্রতি ট্রাক মাটির দাম ৮০০ টাকা করে। এ ছাড়া তিনি এই কবরস্থানের জন্য আর কোনো টাকা বা জিনিসপত্র কিনে দেননি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণ করছি। আমাদের কবরস্থানের নামে সরকারিভাবে কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়েছে কি না, তা আমরা জানি না। মাটি ফেলার সময়ও আমাদের জানানো হয়নি।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ওই প্রকল্পের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সাবু এই প্রতিবেদকের ওপর চড়াও হন। এ সময় কবরস্থানের অর্থ আত্মসাৎ প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান বলেন, সরকারি কোনো অর্থ আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রিপন আকন্দ/এনএ