কক্সবাজারের উখিয়া ও রামুর বঙ্গোপসাগর উপকূলে হ্যাচারিতে জন্ম নেওয়া ১৮৫টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে উখিয়ার ইনানী উত্তর সোনারপাড়া এবং রামুর খুনিয়াপালং পেঁচারদ্বীপ এলাকায় হ্যাচারি সংলগ্ন পশ্চিম সৈকতে বাচ্চাগুলো সাগরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বন বিভাগের সহায়তায় নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এসব কচ্ছপের বাচ্চা সংরক্ষণ ও অবমুক্ত করেছে।  

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নেকমর প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা (এনআরএম) ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম জানান, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে অলিভ রিডলি জাতের কচ্ছপ সৈকতে ডিম দিয়েছিল। সেন্ট মার্টিনসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন অংশে দেওয়া ডিমগুলো সংগ্রহ করে কচ্ছপ নিয়ে কাজ করা নেকম। নেকম কর্মীরা এসব ডিম সংগ্রহের পর হ্যাচারিতে রেখে বালির নিচে বিশেষ কায়দায় ফুটানোর উদ্যোগ নেয়। ৬০ থেকে ৯০ দিনের মাঝে ডিমগুলো ফুটে বাচ্চা বের হয়। 

সেভাবে রোববার বিকেলে দক্ষিণ বনবিভাগের ইনানির উত্তর সোনারপাড়া হ্যাচারিতে ১২০টি ও পেঁচারদ্বীপ হ্যাচারিতে ৬৫টি বাচ্চা বালির নিচ থেকে উঠে আসে। এসব বাচ্চা সোমবার দুপুরে সাগরে অবমুক্ত করা হয়। সৈকতের এ বেল্টে আরো সাড়ে ৫ হাজার ডিম ফোটার অপেক্ষায় রয়েছে। 

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম বলেন, কচ্ছপ প্রকৃতির সুইপার। সমুদ্রের আবর্জনাগুলো ভক্ষণ করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে কচ্ছপ। কিন্তু আমাদের অসচেতনতায় নিজের আবাসস্থল হারাচ্ছে এ উপকারী প্রাণীটি। নিষিদ্ধ জালে মাছ শিকারকালে আটকা পড়ে মারা যায় কচ্ছপ। 

পর্যটন বিকাশের কারণে কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলে অতিরিক্ত আলোকায়নে কূলে ফিরে কুকুরের আক্রমণেও মরছে কচ্ছপ। এসব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলেও আমরা কচ্ছপ প্রজননে গুরুত্ব দিচ্ছি। তারই ফলস্বরূপ আজকের কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্তকরণ।

কচ্ছপ অবমুক্তকরণকালে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আনোয়ার হোসেন, সহব্যবস্থাপনা কমিটির (সিএমসি) সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমানসহ বন বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সাইদুল ফরহাদ কক্সবাজার/আরআই