রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে বিয়ের আট বছর পর একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন আদুরী বেগম আশা নামের এক নারী। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। ওই চার নবজাতককে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

আদুরী বেগম আশা কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নাদিরা গ্রামের মনিরুজ্জামান বাঁধনের স্ত্রী। আট বছর আগে তারা দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দীর্ঘ সময় পর চিকিৎসা গ্রহণের একপর্যায়ে আশা অন্তঃসত্ত্বা হন। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসকদের পরামর্শে আদুরী বেগম আশাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চার সন্তানের জন্ম দেন তিনি।

চার নবজাতকের বাবা মনিরুজ্জামান বাঁধন। তিনি ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কর্মরত। দীর্ঘ আট বছর পর সন্তানের বাবা হওয়ায় খুশি তিনি।

মনিরুজ্জামান বলেন, নিরাপদ প্রসবের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে আমি আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে রংপুরে একটি ভাড়া বাড়িতে রয়েছি। গত ১ মার্চ আলট্রাসনোগ্রাম করে একসঙ্গে চার সন্তান গর্ভধারণ করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণ চলতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমার স্ত্রী আশাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং রাত ৯টা ৪০ মিনিটে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন। চার নবজাতক ভালো রয়েছে। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আমার স্ত্রীকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (গাইনি বিভাগ) ডা. ফারহানা ইয়াসমিন ইভা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গর্ভধারণের আট মাসে এই চার নবজাতকের জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ছেলে নবজাতকের ওজন একটু কম হলেও বাকি তিন কন্যা নবজাতকের ওজন ও গঠন ঠিক রয়েছে। বর্তমানে চার নবজাতকই সুস্থ আছে।

হাসপাতালটির কর্তব্যরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তাহসিনা বিনতে আবেদ বলেন, মা আশা বেগমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণে তাকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছ হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পর তার শরীরের অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে। বাচ্চারা ভালো আছে। আশা করি মা-ও ভালো থাকবেন। একসঙ্গে চার সন্তানের সিজারের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের চিকিৎসকরা সেটি সুন্দরভাবে করতে পেরেছেন।

এদিকে চার সন্তান প্রসবের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভিড় করছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগী, অভিভাবক ও উৎসুক মানুষেরা। তাদের প্রত্যাশা, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক চারজন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এনএ