জয় ত্রিপুরা

পার্বত্য জেলা রাঙামাটি শহরের হাসপাতাল এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জয় ত্রিপুরা (২৭) নামের এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৬ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, রাতে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক তরুণকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখনো জীবিত ছিলেন তিনি। পরে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়।

জয় ত্রিপুরা রাঙামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদক। তিনি শহরের দেবাশীষ নগর এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি প্রয়াত খোকন মণি ত্রিপুরার ছেলে।

সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘মঙ্গলবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জমিরউদ্দিন হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জমির ভাইকে চট্টগ্রামে রেফার করলে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অন্য অনেকের মতো জয়ও তাকে দেখতে হাসপাতালে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়কে তার মোটরসাইকেল আটকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে চুরিকাঘাত করেছে বলে জেনেছি। পরে হাসপাতালে মারা যায় সে। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল আলম রাশেদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে বলেন, ‘জয় যে এলাকায় থাকত, সেখানে সে পাহাড়িদের মধ্যে একাই সক্রিয় ছাত্রলীগ নেতা ছিল। তাকে প্রায়ই এ কারণে আঞ্চলিক একটি দলের কর্মীরা ভয়ভীতি দেখাত বলে সে আমাদের জানিয়েছিল বিভিন্ন সময়। এ ঘটনায় তারা কিংবা যেই জড়িত, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিচার চাই।

নিহতের মামা ঝিনুক ত্রিপুরা বলেন, রাতে সে জমির ভাইকে দেখার জন্যই হাসপাতালে গিয়েছিল। কে জানত নেতাকে দেখতে গিয়ে নিজেই লাশ হয়ে ফিরবে ঘরে? আমরা এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

ঘটনার সময় হাসপাতালে থাকা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামালউদ্দিন বলেন, আমরা জমীর ভাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য বের হয়ে বাসা থেকে কিছু কাগজপত্র আনার জন্য হাসপাতালের গেটের কাছেই অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করছিলাম। তখনই হঠাৎ কিছু ছেলেপেলেকে হইচই করতে দেখি এবং তারা কাউকে মারধর করছিল। যেহেতু আমরা রোগী নিয়ে টেনশনে ছিলাম, তাই ওদিকে মনোযোগ কম ছিল। পরে দেখি একটা ছেলে হাসপাতালের মেইন গেটের কাছে কাঁতরাচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিক ওসিকে ফোন করে বিষয়টি জানাই।’

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন জানিয়েছেন, ‘মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, প্রাথমিকভাবে কেউ বলতে পারছে না। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের অবশ্যই আমরা খুঁজে বের করব।’

মিশু মল্লিক/এনএ