রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হিমেলের প্রথম জানাজা কেন্দ্রীয় মসজিদে সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে তার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে গ্রামের বাড়ি নাটোরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

এর আগে হিমেলের মরদেহ সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ১০টা পর্যন্ত মরদেহ রাখার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের  শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার প্রতি সম্মানার্থে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাবি প্রশাসন। বুধবার হিমেলের জানাজার আগে উপাচার্য তার বক্তব্যে এ কথা জানান। তবে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে একমত হতে পারেনি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক মো. সুলতান উল-ইসলাম ও নিহত হিমেলের মামা মো. মুন্না।

হিমেলের মামা মো. মুন্না বলেন, আমার বোন আগে স্বামী হারা ছিল। এখন পুত্রহারাও হলো। আমি চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আর কোনো মায়ের কোল খালি হোক। শিক্ষার্থীদের যে দাবি প্রশাসন মেনে নিয়েছে তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করে।

উপচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কত ভারী তা আমি বুঝি। আজ আমার লাশ হিমেলের কাঁধে থাকার কথা ছিল। সব সময় হিমেলের পরিবারের পাশে থাকব। ইতোমধ্যে হিমেলের মায়ের অ্যাকাউন্টে পাঁচ লাখ টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। ধাপে ধাপে আরও সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে হিমেলের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করেছেন সহপাঠীরা। তবে উপাচার্য তার ক্ষমতাবলে এককালীন ৫ লাখ টাকা ও পরিবারকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতার কথা বললেও শিক্ষার্থীরা তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা কোনো ধরনের আশ্বাসে ভরসা করতে পারছেন না। গ্রামের বাড়িতে হিমেলে দাফন শেষে বিকেলে ক্যাম্পাসে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে তাদের।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনে নির্মাণাধীন বিজ্ঞান ভবনের পাশে ট্রাকচাপায় নিহত হন শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেল। এরপর থেকে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সহপাঠী হত্যার বিচারের দাবি তুলে আন্দোলন করছেন। তারা পাঁচটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করার পাশাপাশি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

মেশকাত মিশু/এসপি