দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আত্মহত্যার সূচকে দ্বিতীয় স্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। ২০২১ সালে জবির ছয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। ২০২১ সালে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০১ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৩৬ শতাংশই ছাত্র। নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তা ৩৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অর্থাৎ, ছাত্রীদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ছাত্র গত বছর আত্মহত্যা করেছেন।

সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থী। ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সম্পর্কের জটিলতার কারণে আত্মহত্যা করেন।

প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- সম্পর্কের কারণে ২৪ দশমিক ৭৫, পারিবারিক সমস্যায় ১৯ দশমিক ৮০, মানসিক যন্ত্রণায় ১৫ দশমিক ৮৪, পড়াশোনা জন্যে ১০ দশমিক ৮৯ ও আর্থিক সমস্যার কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার মধ্যে সামাজিক, আর্থিক ও পারিবারিক চাপ বেড়ে যাওয়া ছাত্রদের আত্মহত্যার পেছনে বড় কারণ। অনার্স পড়ুয়া তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার তুলনামূলক বেশি যা ৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২২-২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি। সমন্বয়কৃত তথ্যগুলোর মধ্যে ৬০টি আত্মহত্যার ঘটনা এই বয়সসীমার শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে, যা মোট ঘটনার ৫৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।

আত্মহননের বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং জবি শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, আত্মহত্যার যে প্রবণতা তা একদম শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব নয় তবে এমন মানসিক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজ নিজ ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারির ৩ তারিখ থেকে করোনায় বন্ধের আগ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী কাউন্সিলিং সেন্টারে রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং তার অর্ধেক সংখ্যক শিক্ষার্থী কাউন্সিলিং নিয়েছেন। এ সংখ্যাটি বেশ সন্তোষজনক।

এমটি/ওএফ