অনুমতি না নিয়ে সম্মেলনের প্রস্তুতি ঢাবি ছাত্রলীগের
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই হল সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা। যদিও প্রশাসন করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় নিয়ে সম্মেলন আয়োজন না করার পক্ষে মত দিয়েছে।
অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের কারণে অনুষ্ঠানের ব্যাপ্তি কমিয়ে আনা হবে। সেখানে লোক সমাগমও কম হবে। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতসহ সরকারি অন্যান্য নির্দেশনা প্রতিপালন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল শাখার নেতাকর্মীদের নিয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। যদিও সম্মেলনের জন্য এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেননি ছাত্রলীগ নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, করোনা আতঙ্কের মধ্যে আমরা কাউকেই সভা-সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছি না। কেননা হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এছাড়া সভা-সমাবেশের মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। এজন্য আমরা এর অনুমতি দিচ্ছি না।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার হল সম্মেলন। করোনার কারণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে হল সম্মেলন করতে না পারলেও ১৮টি হলের পদপ্রত্যাশী, অতিথি এবং কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ ৫০০ জন নিয়ে সম্মেলন করার পরিকল্পনা করছে ঢাবি ছাত্রলীগ।
তবে কোভিড-১৯ জনিত স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণ মেনে চলে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কর্মসূচিটি করার কথা জানিয়েছেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র পদপ্রত্যাশী নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা কর্মসূচিটি করব। এতে আমরা লোকসমাগম সর্বোচ্চ ৫০০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখব।
হল সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধন বলেন, কোভিড পরিস্থিতি সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল সম্মেলন উপহার দিতে পারব বলে আশা করছি।
অনুমতি নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো অনুমতি নেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা কর্মসূচিটি করব। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে আমার বিশেষ গুরুত্ব থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশ এবং গণজমায়েত উৎসাহিত করছি না। যেহেতু করোনাকালীন নিষেধাজ্ঞা চলছে এই সমস্ত কাজ আপাতত না করতে পরামর্শ দিচ্ছি এবং সহযোগিতা চাচ্ছি।
হল সম্মেলনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, সবার জন্যই একই কথা। কোনো সংগঠনকে সুনির্দিষ্টভাবে আমরা বক্তব্য দিচ্ছি না। আমাদের বক্তব্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো জায়গায় সমাবেশ, যেখানে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে সেগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য আমরা পরামর্শ দিচ্ছি এবং সহযোগিতা চাচ্ছি। একই বক্তব্য সবার জন্য।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮ হল শাখার কমিটি হয় ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর। এক বছর মেয়াদি এই কমিটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও হয়নি নতুন কমিটি।
এইচআর/এসকেডি