নগর জীবনের যান্ত্রিকতায় পিষ্ট শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। যেখানে প্রকৃতি ও পরিবেশটা পুরোপুরি গ্রামীণ আবহে তৈরি। এ কারণে শীতের প্রকোপটা একটু বেশিই।

ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট মোড় কিংবা কাটা পাহাড়ের পথ ধরে হাঁটলেই শীতের অনুভূতি বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যায়। গরম ভাঁপা পিঠা, ঝরে পড়া পাতা, হরেকরকম পাখির কলরব, পাহাড় আর সবুজে মোড়ানো ক্যাম্পাসে আসে শীত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও শীত ঋতু উপভোগ করার চেষ্টা করেন নিজেদের মতো করে। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের আড্ডার কেন্দ্রস্থল হয় শহীদ মিনার, লেডিস ঝুপড়ি, কলা ঝুপড়ি, জিরো পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্পট। কনকনে শীতের আমেজটা বাড়িয়ে দেয় ক্যাম্পাসের ভাসমান বাহারি পিঠার দোকানগুলো। শীতের পিঠার স্বাদ নিতে দোকানগুলোতেও ভিড় জমে শিক্ষার্থীদের।

লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রুমি আহমেদ বলেন, হেমন্তের শেষে শীতের জানান দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ি হিম বাতাস আর শহীদ মিনার চত্বরে বসা ভাসমান বাহারি পিঠার দোকানই যথেষ্ট। স্থায়ী কোনো টিএসসি না থাকায় বিকেলের পর থেকে শহীদ মিনারেই জমে ওঠে আমাদের আড্ডা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ শিকদার বলেন, চারদিকে পাহাড় আর সবুজের অরণ্যঘেরা আমাদের ক্যাম্পাস।  শীতে কুয়াশা তার বিশাল চাঁদর দিয়ে ঢেকে এক মায়াবী হাতছানির সৃষ্টি করে। ভোরে ঘুম ঘুম চোখে গরম কাপড় জড়িয়ে ক্লাস করতে যাওয়াটা আমার কাছে বেশ উপভোগ্য। মধ্যরাতে বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে পাহাড়ঘেরা রাস্তা দিয়ে হাঁটা, ছোট-ছোট দোকানে বসে চা খাওয়া, দলবেঁধে বেসুরো গলায় গান গাওয়া বিষয়গুলো উপভোগ করি।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিহা ইবনাতের কণ্ঠে ভিন্ন সুর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়েই থাকেন পরিবারের সঙ্গে। বলেন, ক্যাম্পাসের শীতটা প্রতিবারই নতুনত্বের আলোড়ন জাগায়। ১ নং গেটের রাস্তায় শীতের কাপড় জড়িয়ে হাঁটা, কনডেন্সড মিল্কের মিষ্টি চা, গরম আলুর চপ, আর আইটি ক্যান্টিনের সুগন্ধি এলাচ চা, ফরেস্ট্রির কুয়াশা সব কিছু মিলে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে।

এসপি