১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত যা কিছু বাংলাদেশের অর্জন তার পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনন্য অবদান রয়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। একই সঙ্গে এ ধারা অব্যাহত রাখতে মুক্তচিন্তার চর্চা অক্ষুণ্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত ৪র্থ দিনের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহাদত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সর্বদা মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে নিজেদের আলোকিত করেছেন এবং সমাজ, দেশ ও জাতিকে আলোকিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও অনাগত শিক্ষার্থীদের এই আলোয় আলোকিত হওয়ার জন্য এসব চর্চা অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সঙ্গে যোগসূত্র রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সব আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জন থেকে আজ পর্যন্ত যা কিছু বাংলাদেশের অর্জন হয়েছে তার পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান রয়েছে। এখনকার তরুণ প্রজন্ম যারা দেশের জন্য অবদান রাখছেন তাদের সিংহভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সে জন্য আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে গর্ববোধ করি।

তিনি বলেন, আগামীতে যারা নেতৃত্ব দেবেন তাদের বলব, ১০০ বছর আমরা কী করেছি, তারচেয়ে আগামী ১০০ বছর আমরা কী করব সে নিয়ে আমরা বেঁচে থাকব ভবিষ্যতে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি রয়েছে। ভবিষ্যতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নিজেদের কর্মগুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রাখবেন।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি গর্ব অনুভব করি। ষাটের দশকে এ ক্যাম্পাসে এসে আমি বঙ্গবন্ধুকে চিনেছি, বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন-সংগ্রাম-নেতৃত্ব দেখেছি এবং বাংলাদেশকে চিনেছি। প্রত্যেকটি আন্দোলন-সংগ্রামে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এইচআর/এসকেডি