‘বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হচ্ছে শিক্ষা’
গুচ্ছ পরীক্ষা পরবর্তী আবেদন ফি-কে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। রোববার (৭ নভেম্বর) দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সহ-সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে এবং দফতর সম্পাদক সালমান সিদ্দিকীর পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার এবং প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ।
বিজ্ঞাপন
সভাপতির বক্তব্যে ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীরা গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সময় ১২০০ টাকা ফি হিসেবে দেয়। ফলাফল প্রকাশের পর গত ৩ নভেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তি দেয়, ভর্তি আবেদনের জন্য প্রতিটি অনুষদে পুনরায় ৬৫০ টাকা হারে দিতে হবে। এতে বিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্রের ৪ বিভাগে আবেদন করতে ২৬০০ টাকা ব্যয় হবে। এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে যদি গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত অন্তত ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে হয় তবে প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এভাবেই শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের পাঁয়তারা চলছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো উচ্চতর জ্ঞানচর্চা এবং মননশীল মানুষ তৈরির প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন মুনাফা কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় তখন এ তার মূল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নৈতিক সম্পর্ক নষ্ট হয়, যার বিষময় প্রভাব পড়ে গোটা সমাজে।
সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, শিক্ষা হলো মৌলিক-মানবিক অধিকার। তাই শিক্ষার আর্থিক ও আয়োজনগত সকল দায়িত্ব রাষ্ট্র ও সরকারের। কিন্তু রাষ্ট্র-সরকার সে দায়িত্ব অস্বীকার করছে। শিক্ষা বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে শিক্ষা বাণিজ্য। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। এতে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, শিক্ষা সংকোচন চলছে।
তিনি আরও বলেন, করোনার সময় প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত ছিল সহযোগিতামূলক মনোভাবের জায়গা থেকে ভর্তির আবেদন ফরমের মূল্য কম রাখা। গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল এতে অর্থব্যয় এবং ভোগান্তি কমবে। কিন্তু নতুন করে আবেদন ফি নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের অর্থ ব্যয়, সময় অপচয় এবং হয়রানি আগের চেয়েও বাড়াবে।
এইচআর/এসকেডি