প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধানফটকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ভুলভাবে খোদাই করা থাকলেও এ ব্যাপারে জানেই না কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে নানা সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার পরও এ বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

২০০৬ সালে জাতীয় সংসদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ নামে একটি বিল পাস হয়। আইনটির ৩ নম্বর ধারার ১ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের বিধান অনুযায়ী ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (Comilla University) নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইবে।’ অর্থাৎ ইংরেজি ভাষায় লিখলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম ‘কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি’ই লিখতে হবে, ‘ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’ নয়।

তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেলতলী বিশ্বরোডসংলগ্ন এলাকায় প্রধানফটকের নামফলকের ওপরে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম ‘ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’ নামে খোদাই রয়েছে। অথচ এ নামে ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। যদিও সেটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কালো তালিকাভুক্ত।

আরও পড়ুন : সওজের প্রকৌশলীর স্ত্রীর এত সম্পদ!

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবেগ জড়িত। তাছাড়া প্রতিদিন মহাসড়কে চলাচলকারী হাজারো মানুষ এ ফটক দিয়েই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে চিনে। সেখানেই এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় প্রশাসনের নজরে না আসায় আমি হতাশ হয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এনএম রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এ রকম ভুলভাবে উপস্থাপন হওয়াটা খুবই দুঃখজনক। এটিতো (খোদাইকৃত ভুল নাম) আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নয়। বিষয়টি দ্রুতই সংশোধন করা দরকার।

আরও পড়ুন : দূরপাল্লার বাস চলাচলে হাইওয়ে পুলিশ ছাড় দেবে : এনায়েত উল্যাহ

এদিকে, সম্প্রতি কানাডাভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডেনশিয়াল ইভালুয়েশন সার্ভিস (আইসিইএস) বাংলাদেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারীরা কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য মূল্যায়নের যোগ্যতা হারিয়েছে উল্লেখ করে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

সেখানে একমাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি ‘দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’ নামক রাজধানীর একটি অননুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

সে সময় ইউজিসি সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগম একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রকাশিত তালিকায় কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি এসেছে তা মূলত ঢাকার উত্তরার ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, যেটি ইউজিসির কালোতালিকাভুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন : সম্মানজনক পদত্যাগ করেছিলেন ঢাবির যেসব উপাচার্য

রায়হান কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, কয়েক দিন আগেও নাম বিভ্রাট নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থাপনায়ই এমন ভুল। বিষয়টি খুবই লজ্জাকর।

বিশবিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় গেইটের নামফলকে এ ধরনের ভুল আমাদের নজরে আসে নাই। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অবশ্যই মারাত্মক ভুল। বিষয়টি আমরা দ্রুতই সংশোধন করে নেব।

এমএসআর