‘সান্ধ্য আইন মানি না, মানব না’ দাবিতে ছাত্রীদের অবস্থান
সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা। শুক্রবার (০৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা হলের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে রাত ১০টা পর্যন্ত হলে ঢুকতে পারত ছাত্রীরা। কিন্তু নতুন প্রভোস্ট যোগ দেওয়ার পর তাদের সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে হলে প্রবেশ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ছাত্রীরা বলছেন, ক্লাস, টিউশন কিংবা অন্যান্য কাজে তাদের বাইরে থাকতে হয়। কিন্তু দেরি হলে তাদের নানাভাবে অপমান বা হেনস্তার শিকার হতে হয়। এ জন্য তারা সান্ধ্য আইন বাতিল চান।
জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে টিভি রুমে মিটিংয়ে বসেন হল প্রভোস্ট। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো জানালে হল প্রভোস্ট তাদের মূল দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করে সেখানে থেকে চলে যান।
এরপরই হল থেকে বেরিয়ে আন্দোলন শুরু করে তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা। তারা জানান, প্রভোস্ট তাদেরকে ডাইনিংয়ে খেতে বাধ্য করছেন। হলের সিট বাতিল করার হুমকিসহ তাদের ওপর নানাভাবে চাপ তৈরি করা হচ্ছে।
ছাত্রীরা বলছেন, হলের ক্যান্টিনের কর্মচারীরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন, খাবারের প্লেট কেড়ে নিয়েছেন। যে সমস্ত ছাত্রীরা পর্দা করে চলেন তারা ডাইনিংয়ে খাওয়ার পরিবর্তে নিজের রুমে খেতে চায়। সেক্ষেত্রে হলের কর্মচারীরা ছাত্রীদের হাত থেকে প্লেট কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। তাদের প্রশ্ন হলের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কে?
এ সময় ছাত্রীরা ‘সান্ধ্য আইন মানি না, মানব না। ডাইনিংয়ের পচা খাবার খাব না, খাব না। হলের ডাইনিংয়ের খাবার খেতে বাধ্য করা যাবে না, যাবে না’ বলে স্লোগান দেন।
হল প্রাধ্যক্ষ ফেরদৌসী মহল বলেন, ‘দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকায় ইলেক্ট্রিসিটির লাইনসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তার ওপর গণরুমের পাশে ৪০ জনের রান্নার ব্যবস্থা আছে। সেখানে ১৪০ জন রান্না করছে। এ অবস্থায় রান্না করতে গিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে এমন নির্দেশ দেওয়া।
হল ডাইনিংয়ে খাওয়া বাধ্যবাধকতা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ডাইনিংয়ে খাবার মানসম্মত ও দাম কম। আমি নিজেই খেয়ে দেখেছি। এছাড়া তারা যদি রান্না করতে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয় তার দায় কে নেবে?’
ছাত্রীদের অভিযোগ, ডাইনিংয়ে দাম বেশি নিয়েও মানসম্মত খাবার পরিবেশন করা হয় না। হলের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, হল প্রাধক্ষ্য গত মাসে নোটিশ দিয়ে জানান, মেয়েদের ডাইনিং খেতে হবে অন্যথায় সিট বাতিল করা হবে। খাবারের দাম কমানো হবে কিছুদিনের মধ্যে। কিন্তু দাম কমানো হয়নি, খাবারের মানও খারাপ। তাই আমরা আন্দোলন করছি।
সন্ধ্যায় এ খবর লিখা পর্যন্ত সেখানে সড়কে বসে বিক্ষোভ করছিলেন ছাত্রীরা। সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লিয়াকত আলী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও কোনো সমাধান হয়নি। তবে রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন স্থগিত করেছেন হলটির ছাত্রীরা।
এমএসআর