বড় ভাইদের সালাম না দেওয়ায় ঢাবির হলে মারধর!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, জিয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ আল সুবাইলের অনুসারীরা হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ৩-৪ দিন করে গেস্টরুম নেন। সেখানে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে না যাওয়া, বড় ভাইদের সালাম না দেওয়া- ইত্যাদি অযুহাতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের প্রথম বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাস খোলার পর থেকে নিয়মিত গেস্টরুমে নেওয়া হয়। সেখানে বড় ভাইদের সালাম না দেওয়া, হ্যান্ডশেক না করা, প্রোগ্রামে যেতে সামান্য দেরি হওয়ার কারণে তাদের মারধর, মা-বাবা নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। সবশেষ গত সোমবারও ২-৩ জনকে মারধর করা হয়। সেখানে নিয়মিত চলে মানসিক নির্যাতন।
বিজ্ঞাপন
গেস্টরুমে নির্যাতনের শিকার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আনিসুর, দর্শন বিভাগের নাফি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শামীম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রাইসুল, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সজীব, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা বিভাগের শাকিল। তারা সবাই দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের একজন দর্শন বিভাগের নাফি মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি, এসব মিথ্যা অভিযোগ। গেস্টরুম বলতে প্রোগ্রামের আগে বড় ভাইদের নির্দেশে শুধুমাত্র পরিচিতির জন্য তাদের ডাকা হয়। এছাড়া আর কিছুই নয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী আব্দুল্লাহ আল সুবাইল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার জানা মতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি ঘটে থাকে, তা খুবই খারাপ। এটি কখনো কাম্য নয়। সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের গায়ে হাত তোলার এখতিয়ার কারো নেই। আমি অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগী সবাইকে ডেকে বিষয়টি জানব।
তবে এ বিষয়ে এখনো কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মোহাম্মাদ বিল্লাল হোসেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। কোনো শিক্ষার্থী অভিযোগও করেনি। আমি এই প্রথম শুনছি। আমি খোঁজ খবর নেব। যদি শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দেয়, তাহলে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
এইচআর/আরএইচ