ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, গণরুমের বিষয়ে হল প্রশাসন একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কোনোভাবেই যাতে আগের মতো ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ না করে। এটি স্বাস্থ্যবিধি পরিপন্থী। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

রোববার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও রোকেয়া হল পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, কথিত গণরুম কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ সংকট নিরসনে হল প্রশাসনের যে বিশেষ উদ্যোগ, সে উদ্যোগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব মহলের সহযোগিতা খুবই জরুরি। এ উদ্যোগটি তখনই সফল হবে, যখন শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টকহোল্ডারদের ইতিবাচক ভূমিকা থাকবে। তাহলে দীর্ঘদিনের এই সংকট থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব।

সব বর্ষের জন্য হল খোলার বিষয়ে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, পর্যায়ক্রমে আমরা আজ (রোববার) সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলে তুলেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথেষ্ট স্বাস্থ্য সচেতনতাবোধ তৈরি হয়েছে। মহামারি প্রতিরোধে এটি দরকার ছিল। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা দুই ডোজ টিকাও নিয়েছে। হল প্রশাসনও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি তাগিদ দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানা ও টিকা নেওয়ার ধারাটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বড় ধরনের ঝুঁকি থাকবে না।

এদিন সকাল ৮টা থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে দেখা যায়। ফল, চকলেট ও মাস্ক দিয়ে বরণ করে হল প্রশাসন। তবে ছেলেদের কিছু হলে এ আমেজ দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হলে উঠে যাওয়ায় তেমন আমেজ নেই।

তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় ছেলেদের বিজয় একাত্তর হল ও মেয়েদের হলগুলোতে। সেখানে শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের যথাযথ নিয়ম মেনে হলে তুলেছে প্রশাসন। বিজয় একাত্তর হলে কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থী হলে উঠতে চাইলেও তাদের উঠতে দেওয়া হয়নি। আগে না জানার কারণে ভোগান্তিতেও পড়তে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে তুলছি। কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থী উঠতে চাইলেও আমরা ফেরত পাঠিয়েছি। আগামী ১৭ তারিখ লিগ্যাল সিট দিয়েই আমরা তাদের হলে তুলব। আপাতত কাউকে আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্য দিয়ে হলে তুলব না।

সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে তোলার বিষয়ে শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহে আমরা অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের ছাত্রীদের হলে তুলেছি, আজ তুলছি প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। প্রবেশের সময় হল আইডি কার্ড ও টিকা নেয়ার প্রমাণপত্র দেখে তাদের ফুল, চকলেট ও মাস্ক দিয়ে বরণ করে নিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি, শিক্ষার্থীরাও মেনে চলছে। আমরা আশাবাদী যে আমাদের সব শিক্ষার্থী সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।

এইচআর/ওএফ