আজও তদন্ত কমিটির সামনে আসেননি সেই শিক্ষিকা
সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বৃহস্পতিবারও (৭ অক্টোবর) তদন্ত কমিটির নিকট তার বক্তব্য উপস্থাপন করেননি। তদন্ত কমিটি বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার জন্য ক্যাম্পাসে অপেক্ষা করলেও তিনি আসেননি। তিনি আবারও ই-মেইলের মাধ্যমে নিজেকে অসুস্থ দাবি করে আরও ১৪ দিনের সময় প্রার্থনা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ৩ অক্টোবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরাসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করে তদন্ত কমিটি। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সেমিনার কক্ষে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম চলে। কিন্তু সেদিন দুপুর ১২টায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন উপস্থিত না হয়ে ১৪ দিনের সময় প্রার্থনা করেন। এর প্রেক্ষিতে তাকে তিন দিনের সময় দেয় তদন্ত কমিটি। ফলে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তাকে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কমিটির নিকট বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছিল।
তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে গত ৩ অক্টোবর দুপুর ১২টায় তদন্ত কমিটির নিকট এসে তার বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য সময় দেওয়া হলেও তিনি মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে উপস্থিত না হয়ে একটি মেইলে আরও ১৪ দিনের সময় দরকার বলে জানিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি তাকে তিন দিনের সময় দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় আসার জন্য নতুন সময় দিয়েছিল। কিন্তু উনি উপস্থিত না হয়ে আবারও সেই একই কারণ দেখিয়ে পুনরায় আবারও ১৪ দিনের সময় দরকার বলে একটি ই-মেইল করেছেন।
লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, তিনি (ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন) আসবেন না এমন কিছু আমাদের জানাননি, তাই আমরা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিয়েছিলাম তিনি আসবেন। অসুস্থ থাকলে তার অসুস্থতার নথি তদন্ত কমিটির নিকট পাঠানো উচিৎ ছিল, কিন্তু তিনি তা করেননি।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ রাতে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং আছে। সেখানে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নানা বিষয় যাচাই-বাছাই করেই এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, যদি অভিযুক্ত শিক্ষিকা বার বার না আসেন তাহলে তো আর এ কারণে সব কিছু ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। এ ঘটনার সত্য উম্মোচনে যেহেতু রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিনেট সদস্য লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে এবং তারা কাজ করছেন সেহেতু সব কিছু বিবেচনা করেই তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। কমিটির দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সিনেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এটাও সুপারিশ করা হবে এই সিনেট সভা থেকেই। সেই সুপারিশ অনুযায়ীই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর