তৃতীয় দিনের মতো চুয়েট শিক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষা বর্জন
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নেওয়া টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছেন। মঙ্গলবারের (৫ অক্টোবর) প্রথম বর্ষের পরীক্ষায়ও অংশ নেয়নি শিক্ষার্থীরা। সোমবারও (৪ অক্টোবর) তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। একইভাবে রোববার দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায়ও অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষা কার্যক্রম শেষ না হওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে ল্যাব কার্যক্রম শেষ না করা, পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া ও নীতিমালা সংশোধনের কথা বলছেন তারা। তাদের দাবি, অনলাইনে পরীক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ যে নীতিমালা করেছে, তা পূরণ করা অনেকের পক্ষে সম্ভব না। আবাসিক হলে থেকে সশরীরে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী তারা।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ফারুক-উজ-জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনলাইনে আমাদের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। তবে পরীক্ষা না দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের জানিয়েছিল- তারা পূজার আগে পরীক্ষা দিতে চাচ্ছে না।
অনলাইনে পরীক্ষার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শর্তে শিক্ষার্থীদের আপত্তি ছিল- এমন প্রশ্ন করা হলে রেজিস্ট্রার বলেন, অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বোঝার মধ্যে কোনো গ্যাপ থাকতে পারে। অথবা আমারা তাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থী তো অনলাইনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। সমস্যা হলে তারা কীভাবে অংশগ্রহণ করছে। আজকে প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় কোনো কোনো বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
তিনি আরও বলেন, যারা পরীক্ষা দিচ্ছে না তাদের ব্যাপারে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা তো এককভাবে বলা যাবে না।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষার নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট আগে জুম ক্লাস লিংকে যুক্ত হতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ে যোগদানে ব্যর্থ হলে তিনি পরীক্ষায় অনুপস্থিত বলে গণ্য হবেন। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীদের নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প ইন্টারনেটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী পাঁচ মিনিটের বেশি সময় জুম মিটিংয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে তাকে আবারও যোগদান করতে হলে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া পরীক্ষার্থীকে টেবিল থেকে বেশ উঁচুতে ভিডিও ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে, যাতে পরীক্ষার্থী ও তার খাতা সম্পূর্ণভাবে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পাওয়া সম্ভভ নয়। কেউ পাঁচ মিনিটের মধ্যে জুমেে প্রবেশ করতে না পারলে বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি নিয়ে কমপক্ষে ১০ মিনিট নষ্ট হবে। এভাবে আসলে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। এছাড়া ক্যামেরা টেবিল থেকে কিছু ওপরে রাখতে হলে দুুুটি মোবাাইল প্রয়োজন। যা অনেকেরই নেই।এছাড়া একটি টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন ছিল, সেই সময় তাদের দেওয়া হয়নি। এরকম অবস্থায় তাদের কাছে পরীক্ষা বর্জন ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। তাই অধিকাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষা বর্জন করছে।
কেএম/এসএম