করোনাভাইরাসের কারণে ১৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এর মধ্যে দুইবার সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ করলেও পরে তা আর শেষ হয়নি।

সর্বশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের ২৪০তম সভায় বিভিন্ন বিভাগের স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১৬ আগস্টের পর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা এবং সেশনভিত্তিক রুটিন প্রকাশ করছে বিভাগগুলো।

এদিকে আবাসিক হল এবং পরিবহন সেবা চালু না থাকায় বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী। তারা বলছেন, ১৮ মাস ধরে আবাসিক হল ও পরিবহন সেবা বন্ধ  রয়েছে। তবুও সব ফি দিতে হচ্ছে আমাদের। এখন দেশের সব কিছু স্বাভাবিক হলেও পরীক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন এবং হল খুলতে অসুবিধা কোথায়?

কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাইদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, লোকাল বাসে করে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। পরীক্ষার জন্য অন্তত ট্রেন চালু করত প্রশাসন। বাসে চড়ে ক্যাম্পাস পর্যন্ত গেলে এমনিতেই শরীর খারাপ হয়ে যায়। সময়মতো পৌঁছাতে পারার আশঙ্কা তো আছেই।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার বলেন, হল বন্ধ থাকায় পরীক্ষার জন্য নতুন করে বাসা ভাড়া নিতে হচ্ছে। বাড়তি খরচের বোঝা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ফি তো দিতে হচ্ছে ঠিকই। অন্তত হল খোলা থাকলে কষ্ট কিছুটা লাগব হতো।

রোববার (২৯ আগস্ট) পরীক্ষাকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও শাটল ট্রেন চালুর দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ নামক ক্যাম্পাসভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

সংগঠনের সভাপতি হাসিবুল খান বলেন, শিক্ষার্থীদের সংকটাপন্ন পরিস্থিতির বিষয়টি সর্বোচ্চ বিবেচনায় রেখে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী দাবিগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মহৎ ও মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হল এবং পরিবহন ফি মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ যেহেতু শুরু হয়েছে সেক্ষেত্রে ট্রেন চালুর বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলব। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।

ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের সভাপতি গৌরচাঁদ ঠাকুর বলেন, প্রশাসনকে অনেক আগে থেকে আমরা বলে আসছি, আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়া মানে শিক্ষার্থীদের অনিরাপত্তার মধ্যে ফেলে রাখা। আমরা চলমান মহামারি পরিস্থিতিতে সকল প্রকার অন্যায্য ফি আদায় বন্ধের দাবি করছি। সেইসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অন্তত একটি ছাত্র হল ও একটি ছাত্রী হল খুলে দেওয়ার দাবি জানাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এগুলো নিয়ে আমরাও ভাবছি। তবে করোনা পরিস্থিতি ভালোর দিকে যেহেতু সেক্ষেত্রে ক্যাম্পাস খোলার সঙ্গে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হবে। কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।

ট্রেন চালুর বিষয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি টিকার আওতায় আনার চেষ্টা করছি। কয়েকদিনের মধ্যে টিকা গ্রহণের তথ্য ইউজিসির কাছে পাঠাব আমরা। ট্রেন চালুর বিষয়টিও সেরকম। 

এসপি