সংবাদ সম্মেলনে ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ নামের সংগঠন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়াকে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অপসারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার দাবি জানিয়েছে 'অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়' নামের এক সংগঠন। দাবি আদায়ে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। দাবি আদায় না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সংগঠনটি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মুরশিদুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ ও দপ্তর সম্পাদক রাকিব হাসান, ছাত্র ফেডারেশন রাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন।

‘অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়' নামের ঐক্যমঞ্চটিতে মূলত বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চ একসঙ্গে কাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে তারা উপাচার্যকে 'প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ' আখ্যা দিয়ে তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত সকল প্রকার নিয়োগ স্থগিত রাখার আহ্বান জানান। অপসারণ করে গণতান্ত্রিক উপায়ে নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করে ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে যেমন আমরা তা মেনে নিতে পারি না, তেমনি দেশের কোনো মানুষ এই অপরাধকে সহ্য করবেন না। কিন্তু প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ ভিসি ও প্রো-ভিসি কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে এখনও স্বপদে বহাল আছে— তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের প্রশাসনের কোনো দায়িত্বে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় আর একদিনও চলতে পারে না। এত বড় অপরাধ করার পর তাদের শিক্ষকতা করারও কোনো নৈতিক অধিকার নেই।’

দুর্নীতিবাজরা ক্ষমতায় থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃত স্বকীয়তা হারাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, মানবিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকাশের প্রাণ কেন্দ্র। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়েই যদি দুর্নীতি চলে এবং দুর্নীতিবাজরাই ক্ষমতায় থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রকৃত স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলবে।’

রাকসু ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের মাধ্যমে সিনেট পূ্র্ণাঙ্গ করে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নির্মাণ করা ও স্থানীয় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে রাবিকে মুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের থেকে আন্দোলন করে আসছেন তারা।

তাদের দাবি, আন্দোলনের ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে তদন্ত করার ভার দেয়। ইউজিসির তদন্ত কমিটি সরেজমিনে দুদফা তদন্ত করে ভিসি, প্রো-ভিসি ও রেজিস্ট্রারসহ বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২৫ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পায়।

এমএসআর