হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ১৮ ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন ও ক্লাস শুরু হওয়ার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও পুরোপুরি শেষ হয়েছে মাত্র তিনটি সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা।
 
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম চালু রাখার অনুমতি রয়েছে ইউজিসি ও সরকারের উচ্চ মহল থেকে।

দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরোদমে চলছে ক্লাস-পরীক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে নেই কোনো তেমন গতি।

সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ও মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দিয়েছে ইউজিসি।

ইতিমধ্যেই অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছে কিন্তু বাকি সেশনগুলোর আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘ সেশনজটে পড়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৬ ব্যাচের শেষ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। কিন্তু অন্য সব ব্যাচের আটকে থাকা সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা বা অনলাইনে শেষ হওয়া সেমিস্টারের পরীক্ষা কবে হবে, তার কোনো হদিস নেই। এ অবস্থায় জট দীর্ঘতর হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সব ব্যাচের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ ব্যাচে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ৩ জানুয়ারি ২০১৮ কেন্দ্রীয় ওরিয়েন্টেশন শেষে ৭ জানুয়ারি থেকেই বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের ক্লাস শুরু হয়েছিল।

সে হিসাবে এত দিনে এ ব্যাচের তিনটি লেভেলের ছয়টি সেমিস্টার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চালু থাকাকালীন বিভিন্ন আন্দোলনে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকা এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ জটে আটকা পড়েছেন হাবিপ্রবির ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। ১৮ ব্যাচের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের লেভেল-২সে-২-এর কোর্স শেষ হলেও করোনা পরিস্থিতিতে আটকে যায় পরীক্ষা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারদের নিয়ে বসে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে ওঠা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে এর সুপারিশ প্রশাসনের কাছে একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপন করব।

অধ্যাপক ভবেন্দ্রকুমার বিশ্বাস, ডিন, কৃষি অনুষদ

সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা ব্যতিরেকেই পরবর্তী সেমিস্টারের অনলাইন ক্লাস শুরু করার অনুমতি থাকলেও অনেক অনুষদ ও বিভাগে নামমাত্র অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম চলছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

দীর্ঘ সেশনজটে পড়ে ১৮ ব্যাচের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী রাজ হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, খুব খারাপ লাগে যখন শুনি অন্যান্য ভার্সিটির বন্ধু-বান্ধবীরা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে আছে।

গত তিন বছরে অফিশিয়ালি আমাদের মাত্র তিনটি সেমিস্টার শেষ হয়েছে। এবং রেজাল্ট হয়েছে মাত্র দুটি সেমিস্টারের। এর থেকে বড় দুঃখের খবর আর কী হতে পারে! আশা করি শিগগিরই সবকিছুর সমাধান হবে।

সেশনজট নিরসনের বিষয়ে কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ভবেন্দ্রকুমার বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারদের নিয়ে বসে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে ওঠা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে এর সুপারিশ প্রশাসনের কাছে একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপন করব।

বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, সেশনজট কীভাবে কমানো যায়, এ নিয়ে আমাদের কর্মপরিকল্পনা আছে। ইতিমধ্যেই ১৬ ব্যাচের পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। এই ব্যাচের পরীক্ষা শেষ হলে বাকি যেসব ব্যাচদের শুধু সেমিস্টার ফাইনাল আটকে ছিল, তাদের পরীক্ষার নেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাইব।

এনএ