জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাম সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে একই কমিটি দিয়ে চলছে সংগঠনগুলোর কার্যক্রম।

করোনা প্রকোপে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফ, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, ভর্তি ফি মওকুফ ও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরব থাকলেও প্রগতিশীল বাম সংগঠনগুলোর কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কাউন্সিলের মাধ্যমে জবি ছাত্র ইউনিয়নের কেএম মুত্তাকীকে সভাপতি ও খায়রুল হাসান জাহিনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে কমিটি দেওয়া হয়। একই বছরের মার্চে পঞ্চম সম্মেলনের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ মার্ক্সবাদী) কমিটি গঠিত হয়। সম্মেলনে প্রসেনজিৎ সরকারকে সভাপতি ও অনিমেষ রায়কে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বর্তমানে জবিতে সংগঠনটির কোনো কমিটি নেই।

অন্যদিকে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ মূল অংশ) জবি শাখার পঞ্চম সম্মেলনে মোনায়েম হোসেন মুন্নাকে সভাপতি ও তানজিম সাকিবকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেয়। এরপর তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। 

সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জাহিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা আর্থিক সংকটে আছি, দলের নেতাকর্মীদের অনেকে ঢাকায় নেই। করোনা পরিস্থিতিতে সশরীরে কাজ করাটাও ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে মিলে সব কর্মসূচি পালন করে আসছি। আমাদের কমিটি সাধারণত এক বছরের জন্যে করা হয়। তবে কমিটির মেয়াদ নিয়ে লিখিত ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই।

এদিকে, চলতি বছরের এপ্রিলে বাসদ (মার্ক্সবাদী) ভেঙে বাংলাদেশ সাম্যবাদী আন্দোলন গঠন করা হয়। সাম্যবাদী আন্দোলনের ছাত্র সংগঠন হচ্ছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল। এর সঙ্গে যুক্ত ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ মার্ক্সবাদী) জবি শাখার সাবেক প্রসেনজিৎ-অনিমেষ কমিটি। সার্বিক বিষয়ে ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ রায় বলেন, ক্যাম্পাসে কমিটি থাকলেও আমরা বর্তমানে নিষ্ক্রিয়। রাজনীতি নিয়ে এখন ভাবছি না, ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত। সংগঠনের অনেক সদস্য নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। ক্যাম্পাস খোলা থাকলে সদস্য সংগ্রহ করে গতিশীলতা আনা যেত। তবে সেটি এখন সম্ভব না। আমাদের কমিটি সাধারণত এক বছরের জন্যে গঠন করা হয়। বর্তমানে আমাদের কমিটি আছে, আবার নেই।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার অপর অংশের (বাসদ মূল অংশ) সাধারণ সম্পাদক তানজিম সাকিব বলেন, আমাদের স্থবিরতা বা সীমাবদ্ধতা আছে। শুধু আমাদের সংগঠন না, প্রগতিশীল জোটও ক্যাম্পাসে সক্রিয় না, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে কাজ করছি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকলেও আমরা ব্যক্তিগতভাবে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তৎপর ছিলাম। আমরা চেষ্টা করেছি প্রগতিশীল জোটের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্যাম্পাসের ইস্যু নিয়ে কাজ করতে। জোটের অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার চেষ্টা থাকলেও পরবর্তীতে তা হয়ে ওঠেনি।

কমিটির মেয়াদ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সাংগঠনিকভাবে আমাদের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তবে সাধারণত কমিটি এক বছরের জন্যে করা হয়। আমরা শিগগিরই কাউন্সিল করে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে চাই।

এমটি/আরএইচ