ছাত্রলীগ নেতার জন্মদিন পালন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোও। 

বন্ধ থাকলেও ঢাবির হলে থাকছিলেন ছাত্রলীগের নেতারা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তাদের অবস্থান করা কক্ষগুলো সিলগালা করে। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এখনও সংগঠনটির নেতাকর্মীরা হলে থাকছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

জানা গেছে, বন্ধ হলে অবস্থান নিয়েই তারা ক্ষান্ত হননি, বেশ ঘটা করে জন্মদিনের উৎসবও পালন করছেন। মঙ্গলবার (৬ জুলাই) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের অতিথি কক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক এসএম রিয়াদ হাসানের জন্মদিন পালিত হয়েছে। এ সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও উপস্থিত ছিলেন।

জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটার পর আতশবাজিও ফোটানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) প্রাঙ্গণে। এর আগেও বন্ধ হলে অবস্থান করেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা এসএম রিয়াদ হাসান। তিনি কেন্দ্রীয় সভাপতি জয়ের লোক বলে পরিচিত।

বন্ধ হলে জন্মদিন পালনের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা এসএম রিয়াদ বলেন, ক্যাম্পাসে সবাই কেক কাটে। যদিও হল বন্ধ, গেস্টরুম পর্যন্ত তো আসা যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির কারণে সবাই গেস্টরুমে এসে বসেছিলেন। এ সময় হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই ওখানে বসা হয়েছিল। 

হলে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, হলে থাকা হয় না। শুধুমাত্র জন্মদিন পালনের জন্য গেস্টরুমে আসা হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। 

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সিনিয়র আবাসিক শিক্ষক ড. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হলে কেউ থাকেন না এবং কেউ জন্মদিনও পালন করেননি। আমি যতটুকু জানি, বৃষ্টি আসায় তারা এখানে অবস্থান নিয়েছিলেন। যা করার, তারা ক্যাম্পাসে করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য হল প্রশাসন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার সহযোগিতা চাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অবস্থানের খবর পেয়ে গত ২৬ জুন মধ্যরাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে অভিযান চালায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময় অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে গেলেও তাদের অবস্থানের আলামত পায় প্রশাসন। দুটি হলের ছয়টি কক্ষ সিলগালা করে হল প্রশাসন। সিলগালা হয়েছে, জহুরুল হক হলের ৩০১, ৩০২ ও ৩০৩ নম্বর কক্ষ এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ২৫, ৩৩ ও ৩৯ নম্বর কক্ষ।  

এইচআর/আরএইচ